Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Pradhan Mantri Aawas Yojna

চালাঘরে থেকেই অন্যের বাড়ির ব্যবস্থা করেন জাগু

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তফসিলি পরিবারের জাগুর স্বামী গ্রামেই একটি ছোট্ট গুমটিতে পান, বিড়ি ও চা বিক্রি করেন। কখনও দিন মজুরের কাজও করতে হয়।

জাগু প্রধান। নিজস্ব চিত্র

জাগু প্রধান। নিজস্ব চিত্র

প্রণব দেবনাথ
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০৮
Share: Save:

এ যেন উল্টো পুরাণ! এক দিকে শাসক দলের পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরের নেতা ও পদাধিকারীদের নাম মিলছে আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্বের তালিকায়। দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতে নাম বাদ দেওয়ার আবেদনও জমা পড়ছে ভুরি ভুরি। তার মধ্যেই অন্য চিত্র ধরা পড়েছে কাটোয়া ২ ব্লকের জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের যমুনাপাতাই গ্রামে। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা, কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জাগু প্রধান মাটির এক চিলতে ঘরে সপরিবার বাস করেন। আবাস যোজনায় তাঁর বাড়ি না পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও জাগুর এই নিয়ে আক্ষেপ নেই। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা প্রকৃতই গরিব। ২০১১ সালে দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারীদের সমীক্ষায় আমাদের পরিবারের নাম ওঠেনি। তাই সরকারি সুবিধা পাই না। এর সঙ্গে পদে থাকার যোগাযোগ নেই।’’

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তফসিলি পরিবারের জাগুর স্বামী গ্রামেই একটি ছোট্ট গুমটিতে পান, বিড়ি ও চা বিক্রি করেন। কখনও দিন মজুরের কাজও করতে হয়। খুব কষ্ট করেই দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে কিছুটা লেখাপড়া শিখিয়েছেন তাঁরা। ধারদেনা করে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র ছেলে সংসারের হাল ধরতে কাটোয়া-কালনা এসটিকেকে রোডে দাঁইহাট মোড়ে একটি ধাবায় কাজ করেন। কিন্তু, ওই পরিবারের যা আয় তা দিয়ে সংসার চললেও পাকা ঘর করা সম্ভব ছিল না। এর মধ্যেই ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত সমিতির ভোটে দাঁড়ান তিনি। জিতেও যান। আসন সংরক্ষিত হওয়ায় সহ-সভাপতি হন। অভাবের সংসারে হেঁশেল সামলে প্রতিদিন অফিসে যেতে হয়। কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির এলাকার নানা কাজ সামলান। সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধা ও আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তারা যাতে দ্রুত সুবিধা পান তা নিয়ে তদ্বির করেন। কিন্তু লক্ষ্মীর ভান্ডার ও রেশন ছাড়া নিজে কোনও সরকারি সুবিধা পান না।

যমুনাপাতাই গ্রামের বাসিন্দা প্রভাত মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের এলাকার বাসিন্দারা কোনও সমস্যায় পড়লেই জাগুদির কাছে ছুটে যাই। আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি বানানোর টাকা ধাপে ধাপে যাতে, ঠিক সময়ে পেতে পারি সে ব্যবস্থা করে দেন দিদি। তাঁর সহযোগিতায় গ্রামে অনেকের বাড়ি হলেও তিনি আজও মাটির দেওয়াল ও খড়ের চালা ঘরে বসবাস করেন। এটা আমাদেরও খারাপ লাগে।’’ জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের প্রধান গৌতম ঘোষাল বলেন, ‘‘আবাস যোজনা প্রকল্পের ঘর নিয়ে নানা জায়গায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কিন্তু জাগু প্রধান প্রকৃত গরিব হলেও সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বিষয়টি আমাদেরও অবাক করে।’’ কাটোয়ার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পদে থেকেও প্রভাব খাটিয়ে সুবিধা নেননি। জাগু প্রধানের মতো কর্মীরা আমাদের দলের সম্পদ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Aawas Yojna Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy