Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
ডিপিএলে বার্তা বিদ্যুৎমন্ত্রীর

ছাঁটাই নয়, চলবে না বসে মাইনে নেওয়াও

কর্মী ছাঁটাই না করেই রুগ্‌ণ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’ (ডিপিএল)-এর হাল ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও মলয় ঘটক। —নিজস্ব চিত্র।

বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও মলয় ঘটক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৬:৪১
Share: Save:

কর্মী ছাঁটাই না করেই রুগ্‌ণ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’ (ডিপিএল)-এর হাল ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই তাঁর বার্তা, কর্মীদেরও কাজ না করে মাইনে নেওয়ার মানসিকতা পাল্টাতে হবে। সোমবার ডিপিএল পরিদর্শনে এসে তিনি বলেন, ‘‘ডিপিএলের সঙ্কট কাটাতে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী এবং আমাকে তার দায়িত্ব দিয়েছেন। কী ভাবে সংস্থার হাল ফেরানো যায়, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ নেওয়া হবে। তবে কোনও কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে না।’’

দুর্গাপুরে ১৯৬০ সালে গড়ে ওঠা ডিপিএলে এখন প্রথম ছ’টি ইউনিটই বন্ধ। তিনশো মেগাওয়াটের সপ্তম ইউনিট এবং আড়াইশো মেগাওয়াটের অষ্টম ইউনিটটি চালু রয়েছে। কোকওভেন প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বছরখানেক ধরে। বছরে গড়ে দু’শো কোটি টাকা হারে লোকসানে চলছে সংস্থাটি। এ ছাড়া সপ্তম ও অষ্টম ইউনিট গড়ার সময়ে ঋণ নিয়েছিল সংস্থা। তা এখন সুদে-আসলে দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন হাজার চারশো কোটি টাকায়। এ দিন বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, ‘‘সংস্থার সব বিভাগ ঘুরে দেখেছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আলোচনা হয়েছে। বোঝার চেষ্টা করেছি সংস্থা এখন কী অবস্থায় রয়েছে।’’ তিনি জানান, কোকওভেন প্ল্যান্ট আবার চালু করতে গেলে কী করতে হবে, তা খতিয়ে দেখবে বিশেষজ্ঞ কমিটি।

সংস্থা সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুর ছাড়াও বর্ধমান ও বালিতে ডিপিএলের বেশ কিছু জমি পড়ে রয়েছে। সেই জমি ব্যবহার করে সংস্থার কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়ে শীঘ্র কলকাতায় আলোচনা হবে বলে জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে সংস্থায় কয়লার সঙ্কট নিয়ে সমস্যা ছিল। শেষ পর্যন্ত বড়জোড়ায় সংস্থা খনি পাওয়ার পরে সেই সমস্যা মেটার আশা করেছিলেন সংস্থার কর্মীরা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সেই খনি চালু করা যায়নি। এ বিষয়েও কলকাতায় বৈঠকের আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। বিভিন্ন সংস্থার কাছে ডিপিএলের বিদ্যুৎ বিল বাবদ লক্ষ-লক্ষ টাকা বকেয়া। তা আদায়েও কলকাতায় বৈঠক হবে বলে জানান তিনি। শোভনদেববাবু আরও জানান, ছ’নম্বর ইউনিটটি ফের চালু করা যায় কি না, চিন্তাভাবনা চলছে। তবে নতুন কোনও ইউনটি গড়ার সম্ভাবনা কার্যত খারিজ করে তিনি বলেন, ‘‘উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করে লাভ কী?’’

ডিপিএলের বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু কর্মীর কার্যত কোনও কাজ নেই। সে কথা তুলে মন্ত্রী জানান, অফিসে এসে সারা দিন বসে থেকে মাসের শেষে মাইনে নেওয়ার পরিস্থিতি পাল্টাতে হবে। পরে আইএনটিটিইউসি-র এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ‘‘কর্মী ছাঁটাই হবে না। তবে ‘আসি যাই মাইনে পাই’ মানসিকতাও ছাড়তে হবে কর্মীদের।’’ তিনি জানান, ছাঁটাই না করে কী ভাবে সব কর্মীকে কাজে লাগানো যায়, তা খতিয়ে দেখবে বিশেষজ্ঞ কমিটি।

নানা সরকারি সংস্থার প্রাক্তন কর্মীদের ডিপিএলে উঁচু পদে নিয়োগ করা নিয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, ওই সব আধিকারিকেরা কর্মজীবনের প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছেন। ফলে, সংস্থা পরিচালনায় ইতিবাচক মনোভাব নিতে পারছেন না। ওই সমস্ত পদে কমবয়সীদের নিয়োগ করতে হবে। এ দিন বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, ‘‘সব দিক নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট দেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Power minister DPL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE