Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘কাটমানি’ চেয়ে বিক্ষোভে অভিযোগ দলের দিকেই

এ দিন কাটোয়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেডিয়াম পাড়া, প্রান্তিক পাড়ার একাধিক দেওয়ালে সাঁটানো ছিল পোস্টার। তাতে সাদা কাগজে লেখা ‘কাউন্সিলর ঘর তৈরির কাটমানির টাকা ফেরত দাও’।

পড়েছে এই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

পড়েছে এই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০১:৩৭
Share: Save:

কোথাও কাউন্সিলরের কাছে ঘর তৈরির ‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে পোস্টার, কোথাও দোকানের বাইরে টাকার হিসেব চেয়ে পুরপ্রধানকে ‘হুঁশিয়ারি’— এমনই নানা পোস্টারে বুধবার ছেয়ে যায় কাটোয়া শহর। টাকা ফেরত চেয়ে এক কাউন্সিলরের বাড়িতে চড়াও হওয়ারও অভিযোগ ওঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। ওই কাউন্সিলর আবার বিক্ষোভের জন্য দায়ী করেছেন দলেরই এক নেতাকে।

এ দিন কাটোয়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেডিয়াম পাড়া, প্রান্তিক পাড়ার একাধিক দেওয়ালে সাঁটানো ছিল পোস্টার। তাতে সাদা কাগজে লেখা ‘কাউন্সিলর ঘর তৈরির কাটমানির টাকা ফেরত দাও’। নীচে লেখা ‘২০ নম্বর ওয়ার্ডের উপভোক্তাবৃন্দ’। প্রান্তিক পাড়ায় ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বাড়ির কাছেও ওই পোস্টার দেখা যায়। পরে বেলা ১১টা নাগাদ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিঠু রায়ের বাড়িতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখানোরও অভিযোগ ওঠে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের টাকায় বাড়ি তৈরি করে তাতে বাতানুকূল যন্ত্র বসিয়েছেন কাউন্সিলর। এ দিকে এলাকায় যাঁরা গরিব তাঁদের ঘর নেই। পরে অবশ্য ওই যন্ত্র খুলে নেওয়া হয়। তবে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির দেওয়ালে যন্ত্র বসানোর গর্ত রয়েছে। রয়েছে পাইপ ও যন্ত্রের বাইরে থাকা অংশটিও। ওই কাউন্সিলরের অবশ্য দাবি, ‘‘ভাসুরের শরীর খারাপ হওয়ায় কিছু দিন আগে এসি বসানো হয়। এটা উপহার পেয়েছিলাম।’’ ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা দলের শহর সভাপতি অমর রামের অনুগামীরাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁর দাবি। ঘটনার পরে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে দলের কার্যালয় অমরবাবু জোর করে বন্ধ করে দেন, বলেও অভিযোগ।

অমর রামের দাবি, ‘‘আপাতত সাত দিন কার্যালয় বন্ধ থাকুক। কাউন্সিলর মিঠুদেবী ও ওঁর ভাসুর বাসুদেব রায়ের বিরুদ্ধে আগেও কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন বেশ কিছু উপভোক্তা। এতে দলের বদনাম হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মিঠুদেবীর ওই বাড়ি নির্মাণ শেষ হয় ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমি ২৩ অক্টোবর পুরপ্রধান হই। গত বোর্ডের পুরপ্রধান অমরবাবুর আমলেই বাড়ি তৈরি হয়েছে। কাটমানি দিয়ে ঘর পেয়েছেন কি না, দেখা হোক।’’

শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউতলাগলিতেও বাবলু পাল নামে এক শাঁখা ব্যবসায়ীর দোকানের বাইরে ‘বাবলুর কাছে কোন নেতা কাটমানি খেল, পুরপ্রধান জবাব দাও' লেখা পোস্টার দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ১৪০ বর্গফুট জায়গার উপর দোতলা বাড়ি নির্মাণের অনুমতি পেয়েছেন বাবলুবাবু। তার সঙ্গে নিয়মবহির্ভূত ভাবে ভেতরে চারটে শাটার, দোতলায় ওঠার সিঁড়ি করেছেন তিনি। রাস্তার দিকে ফুট তিনেক জায়গা ছাড়া হয়নি বলেও অভিযোগ। দুপুরে গিয়ে অবশ্য দেখা যায়, পোস্টারটি ছেঁড়া। অভিযোগ অস্বীকার করেন বাবলুবাবু। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘দোতলা নয়, বরং বাড়িটি সংস্কার হচ্ছে। সংস্কারের জন্য কি কেউ কাটমানি দেয়?’’

বিজেপি জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘‘তৃণমূলের উঁচু-নিচু সব নেতা দুর্নীতিতে ডুবে আছেন। মানুষ তো হিসেব চাইবেনই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Bribe Poster TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy