ছবি: সংগৃহীত
দোলের দিন সকালে পুজো করতে গিয়ে মন্দির খোলেন পুরোহিত। দেখা যায়, কে যেন তুলে নিয়ে গিয়েছে শিবলিঙ্গ। মাথায় হাত পড়ে মেমারির সাতগেছিয়ার কাছে রঘুনাথবাটি গ্রামের বাসিন্দাদের। ৩০-৩৫ কেজির ওজনের বিগ্রহ চুরির কারণ, কী ভেবে নিয়ে যাওয়া হল, তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গ্রামে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য সেই শিবলিঙ্গের সন্ধান মেলে গ্রামেরই এক জনের খড়ের পালুইয়ে।
কিন্তু বিগ্রহ মিললেও শিবকে আনার উপায় বার করতে পারছিলেন না সেবাইতেরা। শেষমেশ শিবলিঙ্গ কাঁধে নিয়ে হেঁটে মন্দিরে আসেন মেমারি থানার অফিসার ইনচার্জ সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়। সুদীপ্তবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘বিগ্রহটি পাওয়ার পরে কী ভাবে মন্দির পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাবে, এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেবাইতদের অনুরোধেই প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা ৩০ কেজি ওজনের পাথরের বিগ্রহ মন্দির পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছি।’’ তবে বিগ্রহটি কে বা কারা চুরি করে পালাচ্ছিল, তার হদিশ পুলিশ মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রঘুনাথবাটির ঘোষ পরিবারের ওই শিবলিঙ্গটি কার্যত খোলা অবস্থাতেই একটি মন্দিরে থাকত। সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ মন্দিরের পুরোহিত অরুণ মুখোপাধ্যায় পুজো করতে এসে প্রথম দেখেন, বিগ্রহটি নেই। সেবাইত হারাধন ঘোষ বলেন, “আমাদের কাছে সাত পুরুষের হিসাব রয়েছে। তারও আগে শিবলিঙ্গটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমাদের ধারণা, আনুমানিক ৪০০-৫০০ বছর আগে ওই বিগ্রহ আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এত মানুষের সঙ্গে মিশেছি, কোথাও শুনিনি শিবলিঙ্গ চুরি গিয়েছে!”
এ দিন খবর পাওয়ার পরেই মেমারি থানার পুলিশ তদন্তে নামে। পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা যায়, এক টোটো চালক রাতে সাদা কাপড় ঢাকা দিয়ে এক জনকে যেতে দেখেছেন। পুলিশের কর্তারা অনুমান করেন, অত ভারী পাথরের মূর্তি নিয়ে একা বেশি দূর যাওয়া সম্ভব নয়। খোঁজ শুরু হয় রঘুনাথবাটি-সহ আশেপাশের গ্রামে। পুলিশ বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময়ে জানা যায়, গ্রামের শেষ প্রান্তে পরেশ মুর্মুর খড়ের পালুইয়ের নীচে বিগ্রহটি দেখা গিয়েছে। পরেশবাবুর বোন বাসন্তীদেবী সেটি দেখতে পেয়ে ঘোষবাড়িতে খবর পাঠান। পুলিশ গিয়ে দেখে, খড়ের গাদার ভিতরে বিগ্রহটি পড়ে রয়েছে। সেখান থেকে বিগ্রহটি তুলে নিয়ে গিয়ে মন্দিরে রাখার পরে রঘুনাথবাটি গ্রাম দোল উৎসবে মেতে ওঠে।
হারাধানবাবু বলেন, “পুরনো মন্দিরটি সংস্কার করার পরে, বিগ্রহটি রাখা হবে। তত দিন পর্যন্ত আমার মন্দিরেই বিগ্রহটি থাকবে।’’ এসডিপিও (বধর্মান) আমিনুল ইসলাম খান বলেন, “খবর পেয়েই ওই গ্রামে আমরা গিয়েছিলাম। কী ভাবে ও কী মতলবে বিগ্রহটি চুরি করা হয়েছিল, তার তদন্ত শুরু করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy