পুকুর থেকে ব্যালট বাক্স উদ্ধার করছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট দিতে গিয়ে দেখেন অবাধে ছাপ্পা চলছে। রাগে ব্যালট বাক্স তুলে নিয়ে চলে গেলেন গ্রামবাসীরাই। ঘণ্টা কয়েক খোঁজাখুঁজির পর তিনটি ব্যালট বাক্স পুকুর থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের ঘটনা।
ভাতারের ঝর্না কলোনির ভোটাররা সকাল থেকে জড়ো হয়েছিলেন ওড়গ্রাম জিএসএফপি স্কুলে। ১৭ এবং ১৭ নম্বর— এই দু’টি বুথে ভোট চলছিল। কিন্তু শনিবার ভোটের শেষ বেলায় ব্যালট বাক্স ‘ছিনতাই’ হয়ে যায়। আর তাতে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল থেকে প্রশাসন। কারণ, শাসকদলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট দেওয়া এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ করে সাধারণ ভোটারদের একাংশই ব্যালট বাক্স নিয়ে চলে যান।
বিরোধীদের দাবি, বেলা বাড়তেই তৃণমূল কর্মীরা বুথের মধ্যে অবাধে ছাপ্পা মারা শুরু করেন। বাধা দিলেও কোনও কাজ হয়নি। উল্টে তাঁরা শাসানি এবং হুমকি পেয়েছেন। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁরা ভোট দিতে গেলে বাধা পান। লাইনে দাঁড়িয়েও ভোট দিতে না পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সুমিতা সোরেন, লক্ষ্মী হাঁসদার মতো সাধারণ ভোটারদের কথায়, ‘‘গ্রামবাসীদের একাংশ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে ১৮ নম্বর বুথের তিনটি বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে চলে গিয়েছেন। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের তিনটি বাক্সই পুকুরের জলে ফেলে দেওয়া হয়।’’
খবর পেয়ে ওই পুকুরে যায় পুলিশ বাহিনী। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় তিনটি জলভর্তি ব্যালট বাক্স উদ্ধার করে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘আমাদের দাবি ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। কারণ, এ রকম পরিস্থিতি যে হবে, তা আগেই আন্দাজ করেছিলাম। কিন্তু শনিবার বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না। তাই এই পরিস্থিতি তৈরি হল।’’
এ নিয়ে তৃণমূল নেতা প্রশান্ত ঘোষের অভিযোগ, ‘‘বিরোধীরাই বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে বুথে অশান্তি পাকিয়েছেন। তাঁরাই ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে পালান। ভোটকর্মীরা বাধা দিলেও তাঁরা কিছু করতে পারেননি।’’ অন্য দিকে, বিজেপির পোলিং এজেন্ট বিশ্বজিৎ মিদ্যার কথায়,‘‘সকাল থেকে তৃণমূলের লোকজন বুথে ঢুকে ছাপ্পা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। বাধা দিলে আমাদের বুথ থেকে বার করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। অনিয়ম দেখে ভোটারেরাই ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দিয়েছেন।’’
গ্রামবাসী এবং বিরোধীদের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার অসিত ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকেই কিছু লোক বার বার বুথে এসে সমস্যা করছিল। আমি সেক্টরে জানাই। এখানে মোট ১,৩৫৮ জন ভোটার। তার মধ্যে মোটামুটি ৫০০ ভোট হয়েছিল।’’ এখন শাসক এবং বিরোধী দু’পক্ষই আবার ভোট গ্রহণের দাবি করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy