নিজস্ব চিত্র
কলকাতার বড়বাজারের ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলকে খুনের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতে সোমবার অভিযুক্ত রিকিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিযুক্ত রিকি। কী ভাবে দেরিয়াপুরের গ্রামের বাড়িতে সব্যসাচীকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছিল, পুরোটা জানান। জানান, প্রথমেই তাঁরা ঠাকুরদালানের কাছে এসে ছুরি দেখিয়ে গাড়ি চালককে ভয় দেখান। তাঁর মোবাইল কেড়ে নেন। তাঁরা সব্যসাচীর গাড়ি চালক আনন্দ সাউকে বাধ্য করেন সব্যসাচীকে ডেকে আনতে। সব্যসাচী দোতলা থেকে নামার আগেই দুষ্কৃতীরা তৈরি ছিলেন। নেমে এলে কোনও কিছু ভাবার আগেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালান রিকি৷ সেই গুলি লেগেছে কী না, তা রিকি বলতে পারেননি। এ সময় সব্যসাচী পালাতে যান। পালাতে গিয়ে সিড়ির মুখে পড়ে যান। রিকি জানান, সে সময় তিনি আর এক রাউন্ড গুলি চালান। এতেও না থেমে তাঁর দলবল সব্যসাচীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কোপাতে থাকেন। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই পড়ে যান সব্যসাচী। তাঁকে ওই অবস্থায় ফেলেই চম্পট দেন সুপারি কিলার রিকি ও তাঁর সঙ্গীরা। পুলিশ জানিয়েছে, গুলি চালানো ও কোপানোর কথা স্বীকার করেছেন রিকি। তাঁকে বারে বারে ভেঙে পড়তে দেখা যায় সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের সময়।
এর আগে রিকিকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশকিছু নতুন তথ্য পায় পুলিস। সেই সূত্র ধরে সব্যসাচীর খুড়তুতো ভাই সোমনাথ মণ্ডলের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়। যদিও এখনও পর্যন্ত তাঁর হদিশ পায়নি। খুনিদের পথ দেখিয়ে আনা বাইকটির হদিশ মিলেছে। ঘটনার দিন সোমনাথের সঙ্গে দেরিয়াপুরে আসা তাঁর বন্ধুর বয়ান নথিভুক্ত করিয়েছে পুলিস। সোমনাথদের দোকানের কয়েকজন কর্মীকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিস। তার এক বান্ধবীকেও ডেকে পাঠিয়ে পুলিস জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে সূত্রের খবর। সোমনাথ ও তাঁর পরিবারের লোকজন সম্ভবত দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে পুলিসের অনুমান। তবে, বাকি সুপারি কিলাররা কোথায় গা-ঢাকা দিয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস। তাঁরা মোবাইল বন্ধ রেখেছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে তাঁরা যোগাযোগ রাখছেন বলে অনুমান পুলিসের। সে কারণে তাঁদের হদিশ পাওয়া পুলিসের কাছে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাশাপাশি, রিকির হাতে চোটের বিষয়ে জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে পুলিস। রিকির হাতে পুরানো চোট রয়েছে। পুলিসের দাবি, ধরা পড়ার পর মহেশবাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। সেখানে চিকিৎসকের কাছে রিকি জানান, সব্যসাচীকে খুনের সময় একটি গুলি তাঁর হাত স্পর্শ করে বেরিয়ে যায়। তাতেই তাঁর হাতে ক্ষত হয়। মেডিকেল রিপোর্টে সে কথার উল্লেখ করা হয়। কিন্তু, তাতে সন্তুষ্ট নয় পুলিস। গুলির আঘাতেই রিকির হাতে ক্ষত হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা জরুরি বলে মনে হয়েছে পুলিসের। তা ছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে কলকাতার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন। গুলিতে জখম রিকির হাত থেকে রক্তপাত হয়। সংগৃহীত নমুনার সঙ্গে তাও মিলিয়ে দেখতে চায় পুলিস। তদন্তকারী অফিসারের আবেদন মঞ্জুর করে সিজেএম বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy