Advertisement
৩০ নভেম্বর ২০২৪
arrest

Arrest: ‘হামলা’য় মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার মা, মেয়ে-সহ ৪

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, একই পরিবারের কয়েক জন মিলে এই ‘অপারেশন’ চালিয়েছে। পুলিশের দাবি, সমশেরগঞ্জের শেখ শরিফ দলের পান্ডা।

ধৃতেরা ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্র।

ধৃতেরা ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্র। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৪৫
Share: Save:

পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী তাপস দত্তের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছিল রবিবার সন্ধ্যায়। এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মুর্শিদাবাদের সমশেরগঞ্জ থেকে দুই মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, উদ্ধার হয়েছে চুরি যাওয়া সামগ্রী, আগ্নেয়াস্ত্র, ভোজালি। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনায় আরও কয়েক জন জড়িত রয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, একই পরিবারের কয়েক জন মিলে এই ‘অপারেশন’ চালিয়েছে। পুলিশের দাবি, সমশেরগঞ্জের শেখ শরিফ দলের পান্ডা। এই দলে রয়েছে তার স্ত্রী জ্যোৎস্না দাস, মেয়ে সুপর্ণা সাহা, দুই ছেলে শেখ সাদ্দাম, শেখ মাসুদ এবং দুই আত্মীয় শেখ ফিরোজ, শেখ সরিফুল। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ধরা পড়েছে জ্যোৎস্না, সুপর্ণা, মাসুদ, ফিরোজ। বুধবার ধৃতদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। মা-মেয়েকে দু’দিনের জন্য আসানসোল সংশোধনাগারে পাঠানে হয়। বাকিদের দুদিনের জন্য দুর্গাপুর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত জানান, টিআই প্যারেডের পরে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য আর্জি জানানো হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিলোকচন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় দোকান রয়েছে তাপসের। রবিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দোকান বন্ধ করছিলেন। অভিযোগ, আচমকা চার-পাঁচ জনের একটি দুষ্কৃতী দল তাঁর হাত থেকে ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। তিনি বাধা দিতে গেলে, দুই হাতে ভোজালির কোপ মারে তারা। আশপাশের ব্যবসায়ীরা ছুটে এলে, তারা দোকানের পিছনের মাঠ দিয়ে পালিয়ে যায়। তাপসকে প্রথমে রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তাঁর বাঁ হাতের শিরা কেটে গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বুধবার তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। পরিবারের দাবি, ছিনতাই হওয়া ব্যাগে গয়না ও নগদ টাকা ছিল।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, বন্ধ হওয়ার কিছু ক্ষণ আগে ওই দোকানে এসেছিল জ্যোৎস্না ও সুপর্ণা। তারা কেনাকাটার নাম করে বিভিন্ন গয়না দেখতে থাকে। বেশ কিছু ক্ষণ দোকানে থেকে সামান্য টাকার গয়না কিনে বেরিয়ে যায়। তাদের বিষয়ে জেনে পুলিশ নিশ্চিত হয়, তারা ইচ্ছাকৃত ভাবে দোকানের মালিককে ব্যস্ত রেখেছে। সন্ধ্যা নামার অপেক্ষায় ছিল শেখ শরিফেরা। সন্ধ্যা হতেই তারা ‘হামলা’ করে।

এর পরে, কাঁকসা থানার পক্ষ থেকে আশপাশের বিভিন্ন জেলার থানাগুলিতে যোগাযোগ করে ঘটনার কথা জানানো হয়। এসিপি শ্রীমন্ত বলেন, “সমশেরগঞ্জ থানা ও বোলপুর থানার সহযোগিতায় দুষ্কৃতীদের পুরো দলটির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছিনতাইয়ের পরে বোলপুরে শেখ শরিফের ভাড়াবাড়িতে চোরাই গয়না-সহ সকলে রাত কাটায়। সোমবার সকালে তারা চলে যায় সমশেরগঞ্জে। ওই থানার পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির ভিতরে ‘গুপ্ত লকার’ বানিয়ে সেখানে ছিনতাই করা গয়না লুকিয়ে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। সেগুলি উদ্ধার করা হয়। বোলপুরের ওই বাড়ি থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবহার করা ধারাল অস্ত্র, একটি নাইন এমএম দেশি পিস্তল ও একটি ওয়ান শটার উদ্ধার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মোবাইল ফোন। পুলিশ জানায়, একটি মোটরবাইক ও গাড়ি করে ছিনতাই করতে এসেছিল তারা। গাড়িটি উদ্ধার হয়েছে। মোটরবাইকের খোঁজ চলছে।

এসিপি বলেন, “শেখ শরিফের বিরুদ্ধে অতীতে বাসে ডাকাতি-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বাকিরা দ্রুত ধরা পড়বে।”

শরিফ কোথায়? পুলিশের গাড়িতে বসা জ্যোৎস্নার দাবি, “কোথায় গিয়েছে, জানি না।”

অন্য বিষয়গুলি:

arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy