চিত্তরঞ্জনের আমলাদহি বাজারে নির্মাণ ভাঙতে উচ্ছেদ অভিযান। বৃহস্পতিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী
ফের ব্যবসায়ীদের একাংশের মাথায় হাত পড়ল চিত্তরঞ্জনে। বৃহস্পতিবার রেল শহরের আমলাদহি বাজারে বুলডোজ়ার নিয়ে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার অভিযানে নামেন রেল কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৩০ বছর ধরে দোকান চালানো ব্যবসায়ীরা জানান, এ বার কী ভাবে সংসার চালাবেন, সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, রেল বোর্ডের নির্দেশেই অভিযান চলছে। ভবিষ্যতেও তা চলবে। অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদের সময়ে কয়েকটি বৈধ দোকান ভাঙা পড়েছে বলে অভিযোগ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই সব নির্মাণ গড়ে না দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অবৈধ নির্মাণ সরানোর জন্য আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ছিল সময়সীমা। বুধবার রাত থেকে অনেকে নির্মাণ খুলতে শুরু করেন। অনেকে তবু আশায় ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ আরপিএফ বাহিনী নিয়ে অফিসারেরা বুলডোজ়ার দিয়ে একের পর এক নির্মাণ ভাঙা শুরু করেন। বিশেষ ভাবে সক্ষম জনা চারেক কারিগরকে নিয়ে প্রায় তিরিশ বছর ধরে ব্যাগ তৈরির দোকান করেছিলেন সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘রাতারাতি আমার সঙ্গে কর্মহীন হয়ে পড়ল কারিগরেরাও। এ বার কী ভাবে পরিবারের ভরণপোষণ হবে, ভেবে পাচ্ছি না।’’ ফলের দোকানদার প্রদীপ গণ বলেন, ‘‘প্রায় ২৪ বছর ধরে এই ব্যবসার মাধ্যমে সন্তানদের পড়াশোনা-সহ সব খরচ চালাচ্ছি। এ বার কোথায় যাব জানি না।’’
কারখানা সূত্রের দাবি, আমলাদহি বাজারে এমন প্রায় ২০০ জন অবৈধ নির্মাণকারী রয়েছেন। তাঁদের তুলে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার প্রায় ১৪৫টি নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। চিত্তরঞ্জন রেল আবাসন এলাকায় এমন একাধিক অনুমোদিত বাজার রয়েছে। তার মধ্যে আমলাদহি বাজারই সবচেয়ে বড়। রেলকে নির্দিষ্ট ভাড়া দিয়ে অনুমতি নিয়ে দোকান চালাতে দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই অনুমতি ছাড়া দোকান চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাতে রেলের রাজস্ব মার খাওয়ার পাশাপাশি শহরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। আগে আরও প্রায় চারটি বাজারের অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নির্মাণ ভাঙার সময়ে একাধিক বৈধ দোকানও ভাঙার অভিযোগে তুমুল বিক্ষোভ দেখান ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যেরা। সংগঠনের সম্পাদক পার্থ মণ্ডল দাবি করেন, যে বৈধ নির্মাণগুলি ভাঙা পড়েছে, সেগুলি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুনর্নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে। তা না হলে তীব্র আন্দোলন হবে। রেল কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। যাঁদের নির্মাণ অনুমতি না থাকায় ভাঙা হয়েছে, তাঁদের পুনর্বাসনের আবেদনও জানিয়েছে ব্যবসায়ী সমিতি। পুনর্বাসনের দাবি তুলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। যদিও সে বিষয়ে এখনও কিছু ভাবা হয়নি বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy