প্রতীকী ছবি
চালু হল বাস পরিষেবা। কিন্তু সোমবার পর্যাপ্ত বাস না নামায় দুর্ভোগ কাটল না যাত্রীদের। সুযোগ বুঝে দ্বিগুণ ভাড়ায় যাত্রী পরিবহণ করেছে অটো ও টোটো, বলে অভিযোগ। কবে থেকে ফের আসানসোল মহকুমা জুড়ে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস চলাচল করবে, তা নিশ্চিত করেননি বাস মালিকেরা। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, দ্রুত স্বাভাবিক হবে বাস পরিষেবা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার জেলার সাতটি বাস মালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। বৈঠক শেষে উভয়পক্ষই আশ্বাস দিয়েছিলেন, সোমবার থেকে বাস চালানো হবে। কথা রাখলেও এই মহকুমার রাস্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস নামেনি। মহকুমার দু’-একটি রুটে হাতে গোনা কয়েকটি মিনিবাস চলেছে। বড় বাস চলেছে সাকুল্যে ১৮টি। পুরুলিয়া-বর্ধমান-বীরভূম-বাঁকুড়া মিলিয়ে দূরপাল্লার খানপাঁচেক বাসের দেখা মিলেছে রাস্তায়। স্বাভাবিক ভাবে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
নিয়ামতপুর বাসস্টপে এ দিন দাঁড়িয়েছিলেন একটি বেসরকারি কারখানার কর্মী গঙ্গাধর শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, এ দিন থেকে বাসের সমস্যা হবে না। কিন্তু তা না পেয়ে আগের মতো অটো ধরেই কাজে যাচ্ছি।’’ আসানসোলের বিএনআর বাসস্টপে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে বাস না পেয়ে অটোয় চেপে বসলেন বারাবনি ব্লকের এক পঞ্চায়েত কর্মী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মী বললেন, ‘‘সপ্তাহে তিন দিন অফিসে যাওয়ার সরকারি নিদান পেয়েছি। কিন্তু বাস অমিল। জানি না কত দিন এ ভাবে চলবে!’’
পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস যে এ দিন পথে নামেনি, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বাস মালিকেরা। আসানসোল বাস অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ বিজন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাত্রী কেমন হচ্ছে, তা দেখে নিয়ে ধীরে ধীরে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে।’’ মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায়ও বলেন, ‘‘রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। তাই প্রথম দিন পরীক্ষামূলক ভাবে দু’-একটি মিনিবাস রাস্তায় নেমেছে। পরে পরিস্থিতি বিচার করে বাসের সংখ্যা হেরফের হবে।’’
একই চিত্র রানিগঞ্জেও। রানিগঞ্জ-আসানসোল রুটে দু’টি করে বাস ও মিনিবাস চলেছে। তবে পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়ার কোনও রুটে বাস চলেনি। এর জেরে বিপাকে পড়েন এই সব এলাকার যাত্রীরা। রানিগঞ্জে আসানসোল পুরসভার ১ নম্বর বরো কার্যালয়ের কর্মী দুর্গাপুরের পূর্ণিমা মণ্ডল জানান, কয়েকটা বাস চলেছে। সময়ে তা না মেলায় সহকর্মী দেবাশিস শ্যামের মোটরবাইকে করে কাজে এসেছেন। রানিগঞ্জ রেজিস্ট্রি কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাস না পাওয়ায় দুর্গাপুর ও বড়জোড়া থেকে দু’জন কর্মী আসতে পারেননি।
কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস নামল না কেন? বাস মালিকেরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তাঁরা পুরোনো ভাড়াতেই বাস চালাচ্ছেন। তবে, বাসের ভাড়া ঠিক করার জন্য রাজ্য স্তরে একটি ‘রেগুলেটরি’ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলে, রাস্তায় বাসের সংখ্যা বাড়বে না। বাসের ভাড়া বৃদ্ধির প্রসঙ্গে প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এ বিষয়ে ‘রেগুলেটরি’ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।
এই পরিস্থিতিতে আগামী দু-এক দিনেও যে, রাস্তায় বাস ও মিনিবাসের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা নেই, তা মালিকপক্ষের কথাতেই স্পষ্ট বলে মনে করছেন যাত্রীরা। এই অবস্থায় পোয়া বারো অটো ও টোটো চালকদের। রাজ্য সরকার আগেই ঘোষণা করেছে, অটোতে পূর্ণ সংখ্যায় যাত্রী বসানো যাবে। সোমবারও আসানসোল শহর ঘুরে দেখা গিয়েছে, বাস ও মিনিবাস কম থাকায় দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে যাত্রী নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছে অটো ও টোটো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy