প্রতীকী ছবি।
সাম্প্রতিক অতীতের ভোটগুলিতে বামেরা কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে আসানসোল পুর-এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে বামেদের রণ-কৌশল কী, পুরভোটে তাদের কী অবস্থা হতে পারে, এ সব বিষয়গুলি নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মধ্যে।
২০১৫-য় আসানসোল পুরভোটে ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে বামেদের দখলে ছিল, ১৬টি ওয়ার্ড। রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ, কুলটি— এই পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে আসানসোল পুরসভা গঠিত। ২০১৯-এর লোকসভায় রানিগঞ্জ ছাড়া অন্য চারটি বিধানসভা এলাকায় বামেদের এবং ২০২১-এর বিধানসভায় রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া ছাড়া তিনটি বিধানসভা এলাকায় বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ-এর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।
ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সব থেকে খারাপ ফল হয়েছিল কুলটি ও আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে। লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে কুলটিতে ৩.৩৬ এবং আসানসোল উত্তরে ৫.০৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বামেরা। বিধানসভা ভোটে এই দু’টি কেন্দ্রে বামেদের সমর্থনে যথাক্রমে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ভোট প্রাপ্তির হার যথাক্রমে ৩.৩২ এবং ২.৩২ শতাংশ।
কিন্তু, সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য বংশগোপাল চৌধুরী জানান, ভোটে ভাল ফল করতে তাঁদের তুরুপের তাস, সংগঠনের পাশাপাশি, প্রার্থীদের ভাবমূর্তি। তিনি বলেন, “আসানসোলে উত্তর এবং কুলটিতে মোট ছ’জন রেড ভলান্টিয়ারকে প্রার্থী করা হয়েছে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া, ব্যক্তিগত যোগাযোগকে কাজে লাগানো, ‘গ্রুপ মিটিং’-এ জোর দেওয়া হচ্ছে। ফল ভাল হবেই।”
এই ‘ভাল ফল’ কী রকম, সে বিষয়ে বলতে গিয়ে স্থানীয় সিপিএম কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, তাঁদের দলের আসানসোলে তিনটি, বার্নপুর, কুলটি, ডিসেরগড়, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায় একটি করে এরিয়া কমিটি রয়েছে। ২০১৫-র পুরভোটে আসানসোল ১ ও ২ নম্বর এরিয়ায় মোট চারটি, কুলটিতে একটি, ডিসেরগড়ে দু’টি, রানিগঞ্জে পাঁচটি, জামুড়িয়া ও হিরাপুরে দু’টি করে মোট চারটি ওয়ার্ডে জিতেছিল দল ও বামফ্রন্ট। ওই কর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁদের প্রাথমিক পর্যালোচনা অনুযায়ী, এ বার বামেদের অন্তত ৪৪টি ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকার কথা! যদিও, বাম-নেতৃত্ব এমন কোনও পর্যালোচনার কথা
স্বীকার করেননি।
তবে শহরের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত বার জেতা ১৬ জন বাম কাউন্সিলরের অর্ধেকই তৃণমূলে চলে গিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতি এবং গত বারের ভোট-অঙ্কের কথা তুলে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের প্রতিক্রিয়া, “বামেরা এই মুহূর্তে প্রান্তিক শক্তি। ফলে, ওঁরা কোনও হিসাবের মধ্যেই পড়েন না।” বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে’র প্রতিক্রিয়া, “বামেরা রাজ্য এবং দেশে একটি ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ফলে, মানুষ ওঁদের আর বিশ্বাস
করে না।” যদিও, এ সব কথাবার্তাকে আমল না দিয়ে সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক তথা তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সর্বস্তরের ভোটারদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য। তৃণমূলের সন্ত্রাস তা হলেই আটকানো যাবে। আর বিজেপি তৃণমূলেরই অন্য রূপ।” যদিও, সন্ত্রাসের অভিযোগ মানছে না তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy