Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বিধি উপেক্ষা করলেই বিপদ, আশঙ্কা

দুর্গাপুর শহরে অনেকেই মাস্ক পরছেন না। অধিকাংশ মানুষজন বাইরে বেরোচ্ছেন মাস্ক ছাড়াই।

বেনিয়ম: সিটি সেন্টারে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারের একটি শপিংমলে, স্বপ্না মার্কেটে আড্ডায় ও ভগৎ সিংহ মোড়ের একটি মিস্টির দোকানে।  সোমবার। ছবি: বিকাশ মশান

বেনিয়ম: সিটি সেন্টারে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারের একটি শপিংমলে, স্বপ্না মার্কেটে আড্ডায় ও ভগৎ সিংহ মোড়ের একটি মিস্টির দোকানে। সোমবার। ছবি: বিকাশ মশান

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:১৭
Share: Save:

করোনার প্রকোপ কিছুটা কমতেই মাস্ক পরার প্রবণতা প্রায় উধাও হওয়ার মুখে। অথচ, চুপিচুপি করোনার নতুন ‘স্ট্রেন’ নতুন করে থাবা বসাতে শুরু করেছে প্রায় বিশ্বজুড়ে।

দুর্গাপুর শহরে অনেকেই মাস্ক পরছেন না। অধিকাংশ মানুষজন বাইরে বেরোচ্ছেন মাস্ক ছাড়াই। বাজারে গেলে দেখা যাবে, ক্রেতা-বিক্রেতা, দু’পক্ষেরই মাস্ক নিয়ে তেমন হেলদোল নেই। কেউ দাবি করছেন, মাস্ক পরে দমবন্ধ লাগে। কেউ বলছেন, সারাদিন বাইরে ঘুরতে হয়। টানা মাস্ক পরে থাকতে পারেন না। এমনকি, প্রবীণেরাও অনেকে মাস্ক ছাড়া, ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরলে মনে হবে, করোনা বিদায় নিয়েছে। অথচ, রবিবার প্রকাশিত স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী জেলায় নতুন করে ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পর্যন্ত সংক্রমিতের হার ২.৯৩% ও মৃত্যুর হার ১.০৬%। এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে রাজ্য কোভিড ম্যানেজমেন্টের পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, ‘‘মাস্ক পরাটা খুবই জরুরি। না পরলে অনেক ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হচ্ছে।’’

মাস্ক না পরা, স্বাস্থ্য-বিধি না মানার প্রবণতায় উদ্বিগ্ন দুর্গাপুরের চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অতিমারি যতদিন থাকবে, ততদিন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কারণ, সংক্রমণ থেকে নিজে বাঁচা এবং অন্যকে বাঁচানোর অন্যতম উপায় এখন মাস্ক। মাস্ক না পরে ঘোরাফেরা মানে নিজেকে বিপদে ফেলা ও অন্যকে বিপদের মুখে ডেকে আনা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেকেই হয়তো আক্রান্ত। কিন্তু তাঁরা অধিকাংশই হয় উপসর্গহীন, বা সামান্য উপসর্গযুক্ত। নিভৃতবাস, গণ্ডিবদ্ধ এলাকা, এ সব আর প্রশাসনিক ভাবে নেই। ফলে, তাঁদের অনেকেই ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তা ছাড়া, আগে সংক্রমিতের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন তা দেখা হত। এখন সেটাও আর হয় না। তাই এই পরিস্থিতিতে মাস্ক পরা এবং অন্য স্বাস্থ্য-বিধি আরও নিয়ম করে মানতে হবে।

দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালের সুপার শোভন পাণ্ডা বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়েও বহু প্রশ্ন রয়েছে। কী ধরনের মাস্ক পরতে হবে, সে বিতর্কে না গিয়ে সকলের মাস্ক পরা জরুরি।’’ তিনি জানান, এই ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় ভাইরাসের ‘মিউটেশন’ হয় দ্রুত। নতুন নতুন ‘স্ট্রেন’ আসতে থাকে। তাই যতদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসছে, ততদিন মাস্ক পরতে হবে। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘শুধু মাস্ক পরে ও সাধারণ কিছু স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই করোনাকে প্রতিরোধ করা যেত। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও অনেকে রাস্তাঘাটে থুতু ফেলছেন। যা খুব উদ্বেগের।’’

দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ইন্দ্রজিৎ মাজিও জানান, প্রবীণদের অন্য উপসর্গ থাকায় বিপদের সম্ভাবনা বেশি। সে জন্য তাঁদের বেশি সতর্কতা নেওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনা থেকে বাঁচতে সকলের জন্য একই পথ মাস্ক পরা, স্বাস্থ্য-বিধি মানা। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া দরকার। কারণ, তাঁদের অনেকেরই ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন-সহ অন্য উপসর্গ থাকে। তাঁদের ভাইরাস সহজে কাবু করতে পারে। অতিমারি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে।’’

(শেষ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus no mask
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE