নানা জায়গায় সাঁটানো হয়েছে এই রকম ব্যানার-পোস্টার। ছবি: কাজল মির্জা
দামোদরের বাঁধ থেকে বালি বোঝাই করে যাওয়ার সময়ে ট্রাক উল্টে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে সরব হয়েছিলেন পরিজনেরা। সেই দাবিতে এ বার পোস্টার পড়ল গলসি বাজার জুড়ে। তাতে বালি খাদান বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর গভীর রাতে গলসির শিকারপুরে দামোদরের বাঁধে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় একটি ট্রাক। সেটি একটি বাড়ির উপরে পাল্টা খাওয়ায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। এক পরিবারের ওই পাঁচ সদস্য তখন ঘুমোচ্ছিলেন। এই ঘটনা নিয়ে এলাকা তপ্ত হয়ে ওঠে। বেশ কয়েকটি বালি খাদানে ভাঙচুর, বালি তোলার যন্ত্রে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। বাধার মুখে পড়ে পুলিশও। ওই ট্রাকের চালককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগে কয়েকজন এলাকাবাসীকেও ধরা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসি ২ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সুজিতকুমার পাঁজার অভিযোগের ভিত্তিতে খাদানের ইজারদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু মৃতদের পরিজনদের দাবি, পাঁচ জন প্রাণ হারালেও তাঁরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি। বিষয়টি নিয়ে কারও কোনও হেলদোল নেই বলেও দাবি করেন তাঁরা। শনিবার গলসি বাজার, চৌমাথা, নানা ই-রিকশায় ব্যানার ও পোস্টার দেখা যায়। ‘আমজনতার আওয়াজ’ নাম দিয়ে লেখা ওই পোস্টারে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বালি চাপা দিয়ে একটি পরিবারকে ‘ধ্বংস’ করার পরেও কেন মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি?
মৃতদের আত্মীয় সুরজিৎ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘সৎকারের জন্য ঘটনার পর দিন সামান্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরে আর কিছু পাইনি। ক্ষতিপূরণের দাবি জানানোর মতো কেউ আমাদের ধরাছোঁয়ার মধ্যে আসছেন না। সহযোগিতা পাচ্ছি না।” তৃণমূল সূত্রের দাবি, প্রাথমিক ভাবে দলের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে ওই পরিবারকে। প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে দাবি দলের স্থানীয় নেতাদের। গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাসুদেব চৌধুরীর বক্তব্য, “ঘটনার পর থেকেই ওই পরিবারের পাশে রয়েছি আমরা। দলের তরফে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ যাতে মেলে, তারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত তা দেওয়া হবে।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শশীভূষণ চৌধুরী বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের জন্য প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি ক্ষতিপূরণ পাবে।” তাঁর দাবি, শিকারপুরে যে আটটি বালি খাদান রয়েছে, সেগুলি ওই ঘটনার পর থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy