শহর জুড়ে চলে এমনই ট্রাক্টর, মঙ্গলবার কাটোয়া শ্মশানের কাছে। নিজস্ব চিত্র
শহরের মধ্যে দিয়ে বেপরোয়া গতিতে শববাহী ট্রাক্টর চলাচল নিয়ে ক্ষোভ ছিলই। সোমবার রাতে ওই ধরনের একটি ট্রাক্টরের ধাক্কাতেই মৃত্যু হল এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর। স্বাগতা সিংহরায় বন্দ্যোপাধ্যায় নামে বছর তিরিশের ওই মহিলাকে স্থানীয় লোকজনই কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করান। রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। মঙ্গলবার দুপুরে সেখানেই মারা যান তিনি।
ঘটনার পর থেকেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে শহরে। মৃতার পরিবার তো বটেই স্থানীয় বাসিন্দারাও দাবি করেছেন, শববাহী ট্রাক্টর চলায় নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। ওই সহ ট্রাক্টরের চালকেরা মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালান বলেও তাঁদের অভিযোগ। এ দিন সন্ধ্যায় পুরসভা মোড়ে মোমবাতি মিছিলও করেন শহরবাসীর একাংশ। কাটোয়ার মহকুমাশাসক সৌমেন পালের আশ্বাস, শুধু শববাহী নয় শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া যে কোনও ট্রাক্টর চলাচলে রাশ টানা হবে। এ সপ্তাহেই পুরসভা ও পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে দাহকাজ সেরে টেলিফোন ময়দান হয়ে গোয়াই গ্রামের দিকে যাচ্ছিল ট্রাক্টরটি। তখনই স্কুটি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন স্বাগতাদেবী। ট্রাক্টরের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় মাথায় গুরুতর চোট পান হরিসভাপাড়া এলাকার ওই বাসিন্দা। মৃতার স্বামী অমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, আত্মীয় বিশ্বজিৎ মাঝিদের ক্ষোভ, বেপরোয়া গতিতে ট্রাক্টর চালানোতেই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ভাগীরথীর তীরে কাটোয়া শ্মশানে পূর্ব বধমান তো বটেই, নদিয়া, বীরভূম থেকেও প্রতিদিন অনেকে শব দাহ করতে আসেন। ফলে ২৪ ঘণ্টাই শববাহী ট্রাক্টরের আনাগোনা থাকে। শহরের বাসিন্দাদের দাবি, দূরদূরান্ত থেকে দেহ আনা হয়। মৃতের আত্মীয়রাও ওই ট্রাক্টরে থাকেন। কিন্তু চালকরা জনবহুল জায়গা দিয়ে দ্রুত গতিতে বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালান। রাস্তায় হাম্প থাকলেও গতি কমানো হয় না, দাবি তাঁদের। আবার দাহ সেরে বাড়ি ফেরার সময় চালক-সহ শবযাত্রীদের অনেকেই মত্ত অবস্থায় থাকে। ট্র্যাফিকের নিয়মও মানা হয় না, অভিযোগ তাঁদের। মাধবীতলার বাসিন্দা পিনাকিচরণ দে-র অভিযোগ, ‘‘রাত বাড়তে ট্রাক্টরের গতিও বাড়ে। প্রাণ হাতে নিয়েই চলাফেরা করতে হয় আমাদের।’’
কাটোয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে ওই ট্রাক্টরটি আটক করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy