দীর্ঘ অপেক্ষার পরে দেখা মিলল দুর্গাপুর-টাটা ভায়া বাঁকুড়া বাসের। বাসে উঠতে হুড়োহুড়ি যাত্রীদের। দুর্গাপুরে। ছবি: বিকাশ মশান
দুই জেলার বাস মালিকদের মধ্যে টানাপড়েনের জেরে মঙ্গলবার থেকে বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রুটের যাত্রীদের ভোগান্তির শুরু হয়েছিল। বুধবারেও অচলাবস্থা অব্যাহত থাকায় সেই ভোগান্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছল। সরকারি বাস, ট্রেকার, এমনকি, ছোট ট্রাকই ছিল এ দিনের যাতায়াতের ভরসা। যাত্রীদের প্রশ্ন, কেন সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানো হল না!
এ দিন সকাল থেকেই বাঁকুড়ার গোবিন্দনগর বাসস্ট্যান্ড, কেরানিবাঁধ, গন্ধেশ্বরী সেতু লাগোয়া এলাকায় দুর্গাপুরগামী যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরে, একটি করে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস এলে সবাই বাদুড়ঝোলা হয়ে বাসে চাপছেন বলে দেখা গেল। অনেকে আবার বাসে উঠতে না পেরে ফিরেও যান। গন্ধেশ্বরী সেতুর কাছে অপেক্ষা করছিলেন বাঁকুড়ার প্রৌঢ় কৈবল্য বিশ্বাস। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘দুর্গাপুর যাওয়ার সরকারি বাস খুবই কম আসছে। দু’টি বাস পরপর ছাড়তে হল। এত ভিড় ছিল যে উঠতেই পারলাম না।’’ চল্লিশ মিনিট অপেক্ষা করার পরে, একটি সরকারি বাসের দেখা মিললেও তাতে চাপতে পারেননি দুর্গাপুরের একটি বিমা সংস্থার কর্মী সঞ্জয় রক্ষিত। তাঁর কথায়, ‘‘দেখি, আবার কখন বাস আসে। দেরি হয়ে যাবে অফিস পৌঁছতে।’’
দুই জেলার পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা যায়, এই রুটে এসবিএসটিসি-র বাস চলে ৫৫টি। বেসরকারি বাসের সংখ্যা প্রায় ১১০টি। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত এই বেসরকারি বাস চলাচলই সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে রয়েছে।
বাঁকুড়ায় যাত্রী দুর্ভোগের ছবি দেখা গিয়েছে দুর্গাপুরেও। দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া স্ট্যান্ড থেকে বাঁকুড়াগামী বাসগুলি ছাড়ে। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বাঁকুড়া রুটের বেশ কয়েকটি বাস দাঁড়িয়ে। কয়েকজন যাত্রী সেদিকে গেলেও, বাস ছাড়বে না শুনে হতাশ হয়ে ফিরলেন।
এই পরিস্থিতিতে অনেকে ট্রেকারে, কেউ বা গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। এমনকি, বাঁকুড়া থেকে ভোরে আনাজ-সহ নানা সামগ্রী নিয়ে যে ছোট ট্রাকগুলি দুর্গাপুরে আসে সেগুলিতেও যাত্রীদের দেখা গিয়েছে। সোনামুখীগামী বাসে চড়ে বড়জোড়া ও লাগোয়া এলাকার যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছেছেন। কিন্তু চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েছেন বাঁকুড়ার যাত্রীরা। দুর্গাপুরে ট্রেকারে বসেছিলেন বাঁকুড়া স্টেশন এলাকার বাসিন্দা জয়ন্ত রায়। তিনি বলেন, ‘‘একা আছি। তাই এ ভাবে যেতে পারছি।’’ আবার বাস নেই শুনে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের বি-জোনের বাসিন্দা স্নেহা দত্ত। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুর-টাটা ভায়া বাঁকুড়া, এই রুটের একটি বেসরকারি বাসই ছিল ভরসা, জানান বিধাননগরের অবনী রায়।
যাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন, অতিরিক্ত সরকারি বাস কেন নামানো হল না। জেলা পরিবহণ আধিকারিক (বাঁকুড়া) সঞ্জয় বিশ্বাসের অবশ্য দাবি, ‘‘বিষয়টি জেলা প্রশাসন জানে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র থেকে নির্দেশ পেলে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy