প্রতীকী ছবি।
‘লকডাউন’-এর সময়ে শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না। এমনকি, বেতন-সহ অন্য পাওনাও সময়ে মিটিয়ে দিতে হবে। সম্প্রতি আসানসোল মহকুমার বেসরকারি শিল্প-সংস্থাগুলির কর্তৃপক্ষকে ই-মেল করে এই অনুরোধই করেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা শ্রম দফতর।
শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি শ্রমিক ছাঁটাই ও বেতন না দেওয়া সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে দফতরে। বেসরকারি ক্ষেত্রে শ্রমিকদের প্রতি এই বঞ্চনার প্রতিকার চেয়ে শ্রম আধিকারিকদের কাছে আবেদন করেছেন শ্রমিক নেতারাও। অভিযোগ পাওয়ার পরেই শ্রম আধিকারিকেরা উদ্যোগী হয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষদের ওই ই-মেল পাঠিয়েছেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শিল্পদ্যোগীদের দফতরে ডেকে পাঠিয়ে এ বিষয়ে বোঝানো হয়েছে হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। একই সঙ্গে গণ-পরিবহণ শিল্পে যুক্ত শ্রমিকদের বেতন সমস্যা মেটাতে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন শ্রম আধিকারিকেরা।
আসানসোলের ডেপুটি লেবার কমিশনার কল্লোল চক্রবর্তী জানান, দফতরে অভিযোগ জমা পড়ার পরেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তিনি শিল্পাঞ্চলের সমস্ত বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তাদের ই-মেল পাঠিয়ে জানিয়েছেন, এই সঙ্কটের সময়ে কোনও ভাবেই শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না। এমনকি, শ্রমিকদের বেতন-সহ অন্য পাওনাও মেটাতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল মহকুমায় গত কয়েক দিন ধরে একের পরে এক বেসরকারি শিল্পসংস্থায় লাগাতার শ্রমিক বিক্ষোভের খবর মিলছে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই শ্রমিক-কর্মীদের অভিযোগ, তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। এমনকি, আলোচনা ছাড়া, শ্রমিক ছাঁটাই চলছে বলে অভিযোগ। গত শুক্রবার সালানপুরের এথোড়া মোড় লাগোয়া একটি কারখানায় আচমকা শ্রমিক ছাঁটাই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক- বিক্ষোভ শুরু হয়। শ্রমিকেরা বিষয়টি আসানসোলের শ্রম কমিশনারের দফতরে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেন। এর কয়েক দিন আগে কুলটির কদভিটা ও সালানপুরের দেন্দুয়া অঞ্চলে দু’টি কারখানার গেটে লাগাতার শ্রমিক বিক্ষোভ হয়। সব ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। ফলে, প্রায়ই অনাহারে দিন কাটছে তাঁদের। এ সব অভিযোগ পাওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, আসানসোলের ডেপুটি লেবার কমিশনার। কল্লোলবাবু বলেন, ‘‘শ্রমিকদের বেতন-সহ অন্য পাওয়া মেটানো ও ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিতে কারখানার মালিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’ মালিকেরা এই পরামর্শ মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
অবশ্য শ্রম কমিশনারের এই ই-মেলের বিষয়ে কোনও শিল্প-মালিক ব্যক্তিগত ভাবে মন্তব্য করতে চাননি। তবে সংগঠন গত ভাবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর কার্যকরি সভাপতি তথা শিল্পদ্যোগী রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান। তিনি বলেন, ‘‘শিল্পে উৎপাদন একেবারে শূন্য। এই অবস্থায় সরকারি ভর্তুকি পেলে শ্রম দফতরের পরামর্শ স্বচ্ছন্দে মেনে চলা সম্ভব।’’ তাঁরা এই কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে ই-মেল করেও জানিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।
এ দিকে, সিটু নেতা বংশোগোপাল চৌধুরী ও আইএনটিইউসি নেতা বিকাশ ঘটক জানিয়েছেন, বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঠিকা শ্রমিকেরাও বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করার মতো পরিস্থিতি নেই। তাই শ্রম দফতর ও রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে চিঠি লিখে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করেছি।’’ শ্রমিকদের স্বার্থে আসানসোলের ডেপুটি লেবার কমিশনারের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন আইএনটিটিইউসির জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy