Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Paschim Banga Vigyan Mancha

Paschim Banga Vigyan Mancha: বেনা গ্রামে লোক টানবে ‘ভূত’, কটাক্ষ বিজ্ঞান মঞ্চের

প্রায় তিন দশক আগে ‘অনুন্নয়নের’ জন্য পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির বেনা গ্রামের বাসিন্দারা অন্যত্র চলে যান।

বেনা গ্রাম।

বেনা গ্রাম। ছবি: পাপন চৌধুরী

সুশান্ত বণিক
কুলটি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২২ ০৭:৫১
Share: Save:

গ্রামে লোকজন টানতে ভরসা এবার ‘ভূত’!

প্রায় তিন দশক আগে ‘অনুন্নয়নের’ জন্য পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির বেনা গ্রামের বাসিন্দারা অন্যত্র চলে যান। পাশাপাশি, সে সময় কয়েকটি অপমৃত্যুও ঘটে। কিন্তু সে সময় গুজব ছড়ায়, ‘ভূতের উপদ্রবের’ জন্যই গ্রাম ছাড়ছেন বাসিন্দারা! যদিও, এই গুজবের বিরুদ্ধে, ভূত বলে কিছুর বৈজ্ঞানিক সত্যতা নেই জানিয়ে বিজ্ঞানকর্মীরা ধারাবাহিক আন্দোলন করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, ওই গ্রামে বর্তমানে ‘উন্নয়ন’ হয়েছে বলে দাবি আসানসোল পুরসভার। কিন্তু গ্রামবাসী আর ফেরেননি। এই পরিস্থিতিতে জনমানবহীন ওই গ্রামে লোকজনের যাতায়াত বাড়াতে, ভূতেই ভরসা করছে আসানসোল পুরসভা! পুর-কর্তারা একে বলছেন, ‘ভূত পর্যটন’। ঘটনাচক্রে, এ বিষয়ে প্রয়োজনে প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ‘শ্যামাপ্রসাদ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের’ ডিরেক্টর অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ও। তবে, বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে পর্যটনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েও, ‘ভূত’ বিষয়টিকে কেন সামনে রাখা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

সম্প্রতি অনির্বাণ ওই গ্রামে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “ভূতের গ্রাম পরিচয়টি ব্যবহার করেই, থিম পার্ক করা যেতে পারে।” বিষয়টি মনে ধরেছে আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়েরও। তাঁর কথায়, “রাজ্য পর্যটন শিল্পের প্রসারে সবসময় আগ্রহী। পুরসভা একটি প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করবে। কিন্তু গ্রামবাসীকে ‘ভূত পর্যটনের’ জন্য জমি দিতে হবে। আমরা কথা বলব।”

কিন্তু লোক টানতে শেষ পর্যন্ত ভূতে ভরসা? অনির্বাণের দাবি, “ভূতের গল্প বাংলা সাহিত্যের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। এই গ্রামকেও সে সূত্রেই আকর্ষণীয় বিনোদনের কেন্দ্র করা যায়। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে প্রস্তাবও দেব।” বিধানের আবার দাবি, “গুজরাতের ভুজ, সুরাতের ডুমাস সৈকত, পুণের একটি স্থান এবং কার্শিয়াং ডাউহিল, দেশের নানা জায়গাতেই ভূত-পর্যটন বেশ জনপ্রিয়। এতে একেবারেই দোষেরকিছু নেই।”

এ দিকে, থিম পার্ক তৈরি এবং পর্যটন শিল্পের প্রসারের ভাবনাচিন্তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ‘পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের’ জেলা সহ-সম্পাদক প্রসূন রায়। তবে তাঁর সংযোজন: “ভূতের পরিচয়কে শিরোনামে রাখাটা একটা নেতিবাচক ও অবৈজ্ঞানিক ধারণার জন্ম দেয়। তা ছাড়া, গ্রামবাসী অনুন্নয়নের জন্য গ্রাম ছাড়া হয়েছিলেন। ভূতের চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণ অবাস্তব।”

তবে, গ্রাম ছেড়ে যাওয়া বাসিন্দা সন্দীপ মাজি বলেন, “১৯৯২-এ বাড়ি ছেড়েছিলাম। দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যও বেড়ে গিয়েছিল। পুরসভা যদি সত্যিই এমন কিছু ভাবে, আমার জমি দিতে আপত্তি নেই।” পাশাপাশি, রেলকর্মী প্রশান্ত মাজি বলেন, “গ্রামের অবস্থা ভেবে ফেরার পরিকল্পনা নেই। উদ্যোগটি ভাল। প্রস্তাব এলে ভেবে দেখব।” সে সঙ্গে, অশীতিপর শান্তিপদ মাজি জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে সবাই মিলে বসে ভাবনা-চিন্তা করবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Paschim Banga Vigyan Mancha ghost
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy