রাস্তার কুকুরের উপদ্রবে এত দিন লোকালয়ে বিপত্তির অভিযোগ উঠত আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে। এ বার বিপত্তি পানাগড়ের বায়ুসেনা ছাউনিতেও। সেনাকর্মীদের কড়া পাহারা সত্ত্বেও কুকুরের দল যেখানেসেখানে ঢুকে পড়ছে। ফলে বিমান ওঠানামায় বিপত্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সারমেয়-শুমারি করে কুকুরের নির্বীজকরণ ও জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ইঞ্জেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানাগড় অর্জন সিংহ বায়ুসেনা ছাউনির কর্তৃপক্ষ।
পানাগড় বায়ুসেনা ছাউনিটির গুরুত্ব দেশের নিরাপত্তার নিরিখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘাঁটিকে বিশেষ ভাবে ঢেলে সাজাতেও উদ্যোগী হয়েছেন বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ। উত্তরপ্রদেশের হিন্ডনের পরে পানাগড়ে দেশের দ্বিতীয় ও পূর্বাঞ্চলের প্রথম সুপার হারকিউলিস ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছে। রয়েছে ছ’টি সুপার হারকিউলিস বিমান ‘সি ১৩০ জে সুপার হারকিউলিস’, যা অল্প সময়ে দুর্গম উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সেনা ও যুদ্ধের রসদ পৌঁছতে সক্ষম। দিন-রাত এই ঘাঁটি থেকে হারকিউলিস বিমানের ওঠা-নামা লেগেই আছে। এ ছাড়াও অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান নিয়ে মহড়াও চলে। ঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য আরও কয়েক’শো একর জমি জোগাড়ের প্রক্রিয়াও চলছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সেনাঘাঁটিও বিপাকে পড়েছে কুকুরের উপদ্রবে।
বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েক বছরে ঘাঁটি থেকে বিমান ওঠানামার সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু বিমানঘাঁটি ও লাগোয়া এলাকায় কুকুরের দলের ঘোরাফেরা বিপত্তি বাড়াতে পারেন বলে মনে করছেন সেনাকর্মীরা। রানওয়ে বা তার লাগোয়া বিশেষ সংরক্ষিত এলাকায় যে কোনও প্রাণীর উপস্থিতিই বিমান ওঠানামার পক্ষে বিপজ্জনক। কিন্তু কড়া পাহাড়া সত্ত্বেও স্পর্শকাতর এ সব এলাকাতেও মাঝেসাঝে কুকুর ঢুকে পড়ছে বলে জানিয়েছেন বায়ু সেনা কর্তৃপক্ষ। এমনকি, সম্প্রতি একটি যুদ্ধবিমান রানওয়েতে নামার সময়ে আচমকা কুকুর চলে আসে। কোনও রকমে বিপদ এড়ান পাইলট। এ ছাড়া বায়ুসেনার কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কুকুরের কামড়ের ভয় তো রয়েছেই।
এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, বিমান ওঠা-নামার জন্য সংরক্ষিত এলাকায় যে কোনও রকম অবাঞ্ছিত প্রাণীর উপস্থিতি কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও দেশের নানা বিমানবন্দরের রানওয়েতে কুকুর, হরিণ, শেয়ালের মতো প্রাণী ঢুকে পড়ায় অতীতে বিপদের মুখে পড়েছে যাত্রিবাহী বিমান।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্প্রতি বিমানঘাঁটির মুখ্য প্রশাসনিক দফতর সারমেয়-শুমারির জন্য বুদবুদের কোটা গ্রামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়। সেই সংস্থার কর্ণধার চন্দন গুঁই বলেন, ‘‘মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি সমাধানের পথ নিয়েছেন বিমানঘাঁটি কর্তৃপক্ষ। শুমারির কাজ শেষ হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy