নিয়ামতপুরে জিটি রোড জুড়ে অটো-টোটোর ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য ও জাতীয় সড়কে অবৈধ অটো ও টোটো চলাচল বন্ধের বিষয়ে ফের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পরিবহণ দফতর। কিন্তু পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনের দেওয়া ওই নির্দেশ পশ্চিম বর্ধমানে এখনও বাস্তবায়িত হয়নি বলে পর্যবেক্ষণ বাসিন্দাদের একাংশের। ফলে, প্রশ্নের মুখে পড়ছে পরিবহণ দফতরের ভূমিকা।
ইতিমধ্যেই দুর্গাপুরের বাস মালিকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, নির্দেশিকা কবে বাস্তবায়িত হবে। একই প্রশ্ন উঠছে আসানসোলেও। আসানসোল বাজার, হাটন রোড, রবীন্দ্র ভবন, এসবি গড়াই রোড, বার্নপুর এবং রানিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা, নিয়ামতপুর, বরাকর-সহ আশপাশের অঞ্চলে অটো ও টোটোর জন্য তীব্র যানজটের সমস্যায় পড়ার কথা জানাচ্ছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। একটি সরকারি দফতরের কর্মী বিপ্লব মণ্ডলের বক্তব্য, “রাস্তা জুড়ে অটো ও টোটো এমন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে যে, বাস ও অন্য যানবাহন যাতায়াত করতে পারে না। রোজ অফিসে যেতে দেরি হয়।” আসানসোল জেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স চালক মোহিত তরফদারের অভিজ্ঞতা, “রোগী নিয়ে
যাওয়ার সময়েও অটো ও টোটো রাস্তা ছাড়ে না। ওরা কোনও নিয়ম
মানে না।”
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় অনুমোদিত অটোর সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এগুলির রাজ্য ও জাতীয় সড়কে চলাচল করার রুট পারমিট নেই। কিন্তু জেলা জুড়ে অন্তত ছ’হাজার অবৈধ অটো চলছে বলে পর্যবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট মহলের। প্রতিটিই ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ার ‘রেজিস্ট্রেশন’ নিয়ে চলছে। এ দিকে, প্রায় দু’শোটি টোটোর পাড়া ও গলিতে চলাচলের রুট পারমিট আছে। কিন্তু বাস্তবে টোটোর সংখ্যা অগুনতি। তা ছাড়া, অটো ও টোটো রাজ্য ও জাতীয় সড়কেও চলছে বলে অভিযোগ বাস মালিকদের বড় অংশের। যদিও, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আসানসোল ও দুর্গাপুরের অটো ও টোটো মালিকেরা জানাচ্ছেন, নির্দিষ্ট কয়েকটি রুটে যাত্রী পাওয়া যায়। ফলে, সেই সব রুটে চলতে না দিলে আয় তলানিতে ঠেকবে। পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
এ দিকে, এই পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক তরজার মাঝেও বিজেপি ও তৃণমূল, উভয় পক্ষই পরিবহণ দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “অবৈধ অটো ও টোটো চালকদের দিয়ে ভোট লুট করায় তৃণমূল। ফলে, প্রশাসন চাইলেও কিছু করতে পারবে না।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল অনুমোদিত আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া। তাঁর সংযোজন, “অবৈধ অটো ও টোটো চলাচল নিয়ে জেলা পরিবহণ দফতর প্রথম থেকে কড়া অবস্থান নেয়নি। পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে চালকদের উপযুক্ত রুট পারমিট দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার দাবি জানানো হয়েছিল। তা হয়নি। এখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে।”
জেলা পরিবহণ আধিকারিক মৃন্ময় মজুমদারও স্বীকার করছেন, “সচিবের নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়িত করা হবে। কিন্তু তা কী ভাবে বাস্তবায়িত করা যাবে, সেটাই চিন্তার বিষয়।” চিন্তার কারণ কী? মৃন্ময় কিছু না বললেও, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহণ আধিকারিক জানালেন, দফতরে অবৈধ অটো, টোটো ধরপাকড় করার মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী নেই। তাঁর এ-ও অভিযোগ, মাস ছয়েক আগে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু শাসক দলের চাপে ধরপাকড় মাঝপথে বন্ধ করতে হয়। যদিও রাজুর বক্তব্য, “অনৈতিক কাজ আমরা সমর্থন কারি না। নিয়ম মেনে বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য
লড়াই করি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy