Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ক্ষুব্ধ জেলা পরিষদের কর্তা
Kirti Azad

ঢিল পড়তেই রাস্তা নিয়ে রিপোর্ট তলব

মঙ্গলবার গলসি ১ ব্লকের মনোহর-সুজাপুরে পথশ্রী প্রকল্পে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি হয়েছে অভিযোগ পেয়ে দেখতে গিয়েছিলেন সাংসদ।

কীর্তি আজাদ।

কীর্তি আজাদ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৬
Share: Save:

জেলা পরিষদের পথের ‘শ্রী’ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ। দলেরই সাংসদের এমন কাণ্ডে যেন ছ্যাঁকা লেগেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহারের। তাঁর দাবি, কিছু বলা বা করার আগে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত ছিল। বিরোধীদের আবার দাবি, গলসির ওই রাস্তা জেলার পথশ্রী প্রকল্পের কাজের হিমশৈলের চূড়া। সাংসদ যেটা করলেন, তা জেলা পরিষদের চোখে পড়েনি কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। প্রতিটি রাস্তার সমীক্ষা করে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শুভলক্ষ্মী বসু।

বুধবার সভাধিপতি বলেন, “ওই রাস্তা নিয়ে আমাদের কাছেও অভিযোগ এসেছিল। ২১ জুনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্ষার পরে শিডিউল মোতাবেক রাস্তা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। সাংসদ ওই রাস্তা দেখতে যাওয়ার আগে জেলা পরিষদের সঙ্গে কথা বলে নিলে আমরা যে ব্যবস্থা নিয়েছি, সেটা জানতে পারতেন। উনি জেলা পরিষদের আমন্ত্রিত সদস্য। জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে কিছু বলার আগে তথ্য সংগ্রহ করে নিলে ভাল করতেন।”

মঙ্গলবার গলসি ১ ব্লকের মনোহর-সুজাপুরে পথশ্রী প্রকল্পে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি হয়েছে অভিযোগ পেয়ে দেখতে গিয়েছিলেন সাংসদ। তিনি দেখেন, মনোহর সাজাপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গলিগ্রামের লকগেট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু হাতের চাপেই উঠে যাচ্ছে পিচ, পাথর। গ্রামবাসীর দাবি, মে মাসে রাস্তা তৈরির সময় অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়নি জেলা পরিষদ। সাংসদ রাস্তার পাথর তুলে এক ইঞ্জিনিয়ারের পকেটে ভরেও দেন।

জেলায় পথশ্রী প্রকল্পে ৫৮৭টি রাস্তা তৈরি হয়েছে। মোট ৭৪৮ কিলোমিটার রাস্তার ৯০ শতাংশই পিচের। খেত জমির মাঝখান দিয়েও নতুন রাস্তা হয়েছে। জেলা পরিষদের দাবি, রাস্তা তৈরির জন্য ন্যূনতম সময় মিলছে না। মাটি, পাথর ফেলার পর থেকেই ট্র্যাক্টর যাতায়াত করছে। সেই কারণে জমির মাঝ দিয়ে যাওয়া নতুন রাস্তা দ্রুত বেহাল হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ আসছে। পরিস্থিতি বুঝে জেলা পরিষদ বাছাই করা কয়েকটি রাস্তা কংক্রিট বা ঢালাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর জানায়, ওই রাস্তা তৈরির জন্য ন্যূনতম ২৮ দিন প্রয়োজন। তার মধ্যে যাতায়াত করা যাবে না। এর পরেই ঢালাই রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে জেলা পরিষদ। বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় নতুন ও সংস্কার নিয়ে ৫৫০টি রাস্তার কাজ আটকে গিয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গলসির মতো পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তা নিয়ে যাতে কোনও অভিযোগ না ওঠে, সেই কারণে অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রতিটি রাস্তা সমীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (পূর্ত ও পরিবহণ) মিঠু মাঝি বলেন, “প্রতিটি সদস্যকে তাঁদের এলাকার রাস্তায় নজর রাখতে, নিয়মিত রিপোর্ট দিতে বলছি। অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE