Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নোটিস পিছু দু’টাকা, অবস্থা বদলের দাবি

দফতর সূত্রে জানা যায়, দামোদর ডিভিশনেই একমাত্র নোটিস সার্ভারদের অস্তিত্ব রয়েছে। এক সময় সাবেক বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি ও বাঁকুড়া— এই চার জেলায় ২৪৮ জন নোটিস সার্ভার ছিলেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০০:১৭
Share: Save:

সেচ দফতরের রাজস্ব আদায়ের জন্য যাঁরা নোটিস দেন, তাঁদেরই অবস্থা বিপাকে। ওই ‘নোটিস সার্ভারেরা’ জানান, বাম থেকে তৃণমূল সরকার, সবার কাছেই বারবার মিলেছে আশ্বাস। কিন্তু তার পরেও নোটিস পিছু মেলে দু’টাকাই!

তবে দফতরের এক কর্তার কথায়, “বৃহস্পতিবারই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নোটিস-সার্ভারদের সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করি, ওঁদের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো যাবে।’’ নোটিস সার্ভারদের দাবি, তাঁদের মাস-মাইনের ব্যবস্থা করে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দফতর সূত্রে জানা যায়, দামোদর ডিভিশনেই একমাত্র নোটিস সার্ভারদের অস্তিত্ব রয়েছে। এক সময় সাবেক বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি ও বাঁকুড়া— এই চার জেলায় ২৪৮ জন নোটিস সার্ভার ছিলেন। কয়েক বছর আগেও সেই সংখ্যাটা ছিল দেড়শো জন। তাঁরা রেভিনিউ অফিস থেকে নোটিস নিয়ে দশ কিলোমিটার পর্যন্ত সাইকেল করে জমির মালিকের কাছে সেচ দফতরের খালের মাধ্যমে জল নেওয়ার জন্য খাজনার নোটিস নিয়ে পৌঁছন। তবে এই মুহূর্তে ঠিক কত জন ‘নোটিস সার্ভার’ রয়েছেন, সেই তথ্য দিতে পারেনি দামোদর ডিভিশনের সুপারিন্টেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের দফতর।

কৃষি-শ্রমিক বা খেত মজুরদের ন্যূনতম দৈনিক মজুরি, প্রায় ৩০০ টাকা, চা শ্রমিকদের ১৬৯ টাকা। সেখানে দিনভর পরিশ্রমের পরেও সেচ দফতরের এই অস্থায়ী ‘নোটিস সার্ভার’দের রোজগার মেরেকেটে দিনে ২০ টাকা! অর্থাৎ, দিনে দশটির বেশি নোটিস দেওয়া সম্ভব হয় না। তার উপরে শনি, রবি বা অন্য ছুটির দিনে সেই কাজও বন্ধ থাকে, বলছিলেন হুগলির হরিপালের মুসাপুর গ্রামের হেমন্ত কোলে। বর্ধমানের রাধাকান্তপুরের নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল থেকে বাঁকুড়ার খারসি গ্রামের দীপেন্দ্রনাথ সরকারেরা জানান, মাথার ঘাম পায়ে ফেলেও মাসে পাঁচশো টাকা রোজগার হয় না। অবসরে কেউ পৌরোহিত্য করে, কেউ বা রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালান। তাঁরা বলেন, ‘‘সরকারি কাজ তো, ভাল কিছু হবে, এই আশায় কাজ ছাড়া যায় না।’’

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্যানেল রেভিনিউ নোটিস সার্ভার অ্যাসোসিয়েশন’ জানায়, সাংগঠনিক ভাবে আশির দশক থেকে মাস মাইনের জন্য আন্দোলন চলছে। সংগঠনের তরফে সেচ দফতরে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, দফতরের কর্তারা ‘নোটিস সার্ভার’দের প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়েছেন। তাঁদের স্থায়ী করার জন্য বারবার ‘নোট’ দিয়েছেন সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার। বৃহস্পতিবার ‘নোটিস সার্ভার’দের জন্য সেচ ও জলপথ দফতরের সচিবের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের মেন্টর গ্রুপের আহ্বায়ক মনোজ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এক সময় এঁদের নোটিস পিছু দেওয়া হতো ছ’পয়সা। পরে করা হয় ১০ পয়সা। তৃণমূল সরকার আসার পরে ২০১২ থেকে নোটিস পিছু মেলে দু’টাকা। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এ দিকে নজর দিলে ভাল হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Irrigation Department Notice Server
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy