—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এক মাস কেটে গেলেও আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন বন্ধ হওয়ার ইঙ্গিত এখনও মেলেনি। কলকাতা, জেলা শহর ছাড়িয়ে মফস্সল এলাকাতেও পথে নেমেছে নাগরিক সমাজ। সমাজ মাধ্যমেও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন অনেকে। এই আন্দোলনের আঁচ ভোটব্যাঙ্কে পড়ছে কিনা বুঝতে তৃণমূলের ভোট সমীক্ষক সংস্থার কর্মীরা ময়দানে নেমেছেন। তাঁদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, শহরাঞ্চল ছাড়া জেলার বেশির ভাগ জায়গায় আন্দোলনের আঁচ তেমন লাগেনি। কিছু জায়গায় ‘হুজুগে’ পড়ে আর জি কর-কাণ্ডে বিচার চেয়ে ‘অরাজনৈতিক’ ভাবে মহিলারা রাতে পথে নামলেও, তার পিছনে ছিল সিপিএম ও বিজেপি। সমীক্ষকেরা মনে করছেন, বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে রোগী ফিরে যাওয়া কিংবা বহির্বিভাগে এসে হয়রানির শিকার হওয়া নিয়েই গ্রামাঞ্চলে চর্চা বেশি হচ্ছে। বিরোধীদের পাল্টা দাবি, দলের অন্দরের ক্ষোভ সামলাতে ঘরে বসে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।
সমীক্ষকদের একাংশের দাবি, বর্ধমান, কাটোয়া-সহ জেলার ছ’টি পুর এলাকায় মানুষের ক্ষোভ প্রশমনের দাওয়াইও খোঁজা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার কর্মীরা তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব, পুরসভার কর্তা, স্থানীয় বিধায়ক, পুর-প্রতিনিধি, শহর সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। লোকসভা নির্বাচনে শহরাঞ্চলে যে সব ওয়ার্ডে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রত্যেক পুর-প্রতিনিধির মতামত নেওয়া হয়েছে। পুর-পরিষেবায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করেছে। এমনকি পুরপ্রধান বদল করলে হারানো সমর্থন ফিরবে কিনা, তা নিয়েও সমীক্ষকেরা প্রশ্ন করেছেন। একটি ছাড়া জেলার বাকি পুরসভার পুর-প্রতিনিধিরা পুরপ্রধান বদলে সায় দেননি। তবে তাঁদের ‘সক্রিয়’ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
তৃণমূলের ভোট সমীক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিরা সম্প্রতি জেলায় জেলায় ঘুরে সমীক্ষা শুরু করেছেন। সূত্রের খবর, দলের জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি, গ্রামীণ এলাকায় মানুষের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলছেন। সংস্থার প্রতিনিধিদের পর্যবেক্ষণ, পূর্ব বর্ধমানে আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ পুরোদস্তুর শাসক-বিরোধী আন্দোলন হয়ে উঠতে পারেনি। বরং এই অরাজনৈতিক আন্দোলনের ভাগীদার কে, তা নিয়ে বিজেপি ও সিপিএমের মধ্যে ‘ছায়া যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। তাদের মদতে অরাজনৈতিক আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে, এটা বোঝাতে ‘রাত দখল’-সহ নানা কর্মসূচিতে সিপিএম ও বিজেপি নেতৃত্বকে দেখা যাচ্ছে। কর্মসূচি চলাকালীন রাস্তায় পুরসভার আলো কেন জ্বলবে, সে প্রশ্ন তুলে কয়েক জন মহিলা জেলা পুলিশকে হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “সর্বত্র মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে তৃণমূলের ভয়ে সবাই রাস্তায় নামার সাহস দেখাতে পারছেন না।” বিজেপির মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, “এ ধরনের মনগড়া রিপোর্টই বলে দিচ্ছে, তৃণমূলের সঙ্গে গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে।” তৃণমূলের জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের সমীক্ষার কথা জানা নেই। আর জি কর-কাণ্ডে আমরাও বিচার চাইছি। বিরোধীরা ঘোলা জলে মাছ ধরছে।”
আর জি কর-কাণ্ডে তৃণমূল ও তার শাখা সংগঠনগুলি ‘বিচার’ চেয়ে পথে নেমেছে। বুধবার বর্ধমানের টাউন হলে জেলা কমিটির সভা হয়। বিস্তারিত রিপোর্ট নেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। জেলা নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে সভা-সমিতির বা সাংবাদিকদের সামনেও মুখ খোলার প্রয়োজন নেই। দলের নির্দেশ সবাইকে মানতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy