বর্ধিষ্ণু পরিবারের অভাব নেই গ্রামে। কিন্তু সব বাড়িই একতলা, সিঁড়িহীন। কারণ, গ্রামের আরাধ্যা দেবী কালী থাকেন একতলায়। মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম খড়মপুর গ্রামে এমনটাই রেওয়াজ। গ্রামবাসীদের দাবি, দু’এক বার কয়েকটা পরিবার বাড়িতে সিঁড়ি বানিয়ে দোতলা তৈরি করছিল। কিন্তু প্রতিবারই কোনও না কোনও অঘটনায় ঘটায় শুধু একতলা বাড়িই রয়েছে গ্রামে। এ গ্রামের প্রতিমা ভুসোকালী নামেই পরিচিত।
গ্রামে প্রায় সাতশো পরিবারের বাস। তবে পুজো একটাই। কালী পুজোতেই তাই আনন্দে মাতে গোটা গ্রাম। মেলা বসে। গ্রামের নানা জায়গায়। খুঁটি পুঁতে লাগানো হয় রঙিন আলো। বহু বাড়িতে আসেন আত্মীয়-কুটুম্বরাও। পুজো শুরু নিয়ে অবশ্য নানা মত রয়েছে গ্রামে। কারও মতে এ পুজো দুশো বছর পুরনো, কেউ বলেও তারও বেশি। শোনা যায়, এক সাধুর হাত ধরে মাটির ঘরে শুরু হয়েছিল পুজো। বছর কুড়ি আগে দেবীর জন্য উঁচু মন্দির হয়েছে গ্রামে। প্রতিমার উচ্চতা এখন ২২ ফুট।
জানা যায়, নিয়ম মেনে লক্ষ্মী পুজোর পরেই শুরু হয় প্রতিমা গড়ার কাজ। পাশের গ্রাম কামড়ার একটি পরিবার বংশপরম্পরায় ঠাকুর গড়ার কাজ করেন। মূর্তি তৈরির সময় শিল্পীকেও মানতে হয় নানা বিধি। গ্রামবাসীরা জানান, পুজোর দিন অমাবস্যা পরার পরে ঠাকুর ঘরের এক কোণে সর্ষের তেলের তিনটি মাটির প্রদীপ রাখা হয়। প্রদীপের শিখার উপর ধরা হয় মাটির সরা। তাতে যে কালি পড়ে তা দিয়েই রং করা হয় দেবীর গায়ে। চক্ষুদানও হয় সেই কালিতেই। এরপরে শুরু হয় পুজো। গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, ১২টার পর পুজো শুরু হয়, শেষ হতে হতে পরের দিন বেলা ১২টা। পুজো উপলক্ষে খড়মপুরের সঙ্গে রাত জাগে আশেপাশের উজনো, সিজনা, কামড়া, মন্তেশ্বর, জয়রামপুর, সিংহালী গ্রামও। ভিড় জমান দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরাও। বিসর্জন দেখতেও ভিড় উপচে পড়ে। এখানে বিশাল প্রতিমা বিসর্জনের সুবিধার জন্য রয়েছে চাকা লাগানো গাড়ি। মণ্ডপ থেকে ৩০ ফুট দূরে একটি পুকুরেই হয় বিসর্জন। গ্রামের বাসিন্দা আশিস কুণ্ডু, তপন ঘোষ, স্বপন ঘোষরা জানান, প্রদীপের কালি না পড়লে দেবীর পুজো হবে না। শুরু থেকেই এমন নিয়ম চলে আসছে। সব ধর্মের মানুষেরাই আনন্দ করেন এই পুজোয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy