বিক্রি কমেছে দোকানে। নিজস্ব চিত্র।
আদর্শ গ্রাম ঘোষণার পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র উদ্যোগে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সালানপুরের সিদাবাড়ির বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য গ্রামে শিবির করে। কিন্তু তারপরেও এই গ্রাম ও লাগোয়া কোথাও তৈরি হয়নি ব্যাঙ্ক। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ‘অচল নোটে’র সিদ্ধান্তের পরে টাকা-বদল করতে গিয়ে ফাঁপরে পড়েছেন বলে জানান সেই গ্রামের বাসিন্দারাই। তাঁদের দাবি, গ্রামেই অস্থায়ী শিবির বসিয়ে নোট-বদল ও টাকা জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করুক ব্যাঙ্ক।
গ্রামেই ঘরের দাওয়ায় বসেছিলেন বৃদ্ধ রামলাল সিংহ। তিনি জানান, নোট-বদল করতে প্রায় সাত কিলোমিটার পথ উজিয়ে ব্যাঙ্কে লাইন দিতে হচ্ছে। তাঁর চিন্তা, ‘‘এ ভাবে কত দিন চলবে, জানি না।’’ গ্রামবাসীরা জানান, বছর চারেক আগে গ্রাম লাগোয়া কালীপাথর মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ছিল। সেই শাখা বর্তমানে রয়েছে আল্লাডি মোড়ে। শিল্পী সেন নামে এক বধূ বলেন, ‘‘কাক ভোরে সাত কিলোমিটার পথ গিয়ে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়াচ্ছি। না হলে উপায় কী, বাড়িতে হাঁড়ি চড়বে না তো।’’ একই অবস্থা খনিকর্মী কিষানচন্দ্র মণ্ডলেরও। তাঁর কথায়, ‘‘খরচ তো থেমে নেই। টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছি।’’ বাসিন্দাদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের ভোগান্তি কমাতে সিদাবাড়িতেই শিবিরের আয়োজন করুক ব্যাঙ্কগুলি। তা না হলে, নোট-বদলের চক্করে গোটা দিনটাই মাঠে মারা যাচ্ছে বলে জানান বাসিন্দারা।
বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাড়ি এবং প্রতি দিনের কাজ করতে গিয়েও সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। তেমনই এক জন শিবশঙ্কর রুজ। দিন কয়েক বাদেই ভাইঝির বিয়ে। শিবশঙ্করবাবু জানান, ‘‘প্রতি দিন ভোরে ব্যাঙ্কে দৌড়চ্ছি। গ্রামে আস্থায়ী শিবির থাকলে ঝক্কি থেকে বাঁচতাম।’’ তবে বিয়েবাড়ি থাকলে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা তোলার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত খানিকটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে বলে জানান তিনি। সমস্যায় পড়েছেন নিরঞ্জন সেনের মতো দিনমজুরেরাও। তাঁরা জানান, খুচরোর অভাবে গত পাঁচ দিন ধরে কেউই কাজ দিচ্ছেন না। সমস্যায় পড়েছেন মালিক পক্ষও। প্রবোধ গড়াই নামে এক জন বলেন, ‘‘লাইনে দাঁড়িয়ে মিলছে মাত্র সাড়ে চার হাজার টাকা মিলেছে। তা দিয়ে কোনও রকমে কর্মীদের সন্তুষ্ট রাখতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy