পূর্বস্থলীর জামালপুরে বু়ড়োরাজের মেলায়। নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে বোমা, পিস্তল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মেলায় আসতেন ভক্তেরা।যে কারণে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের জামালপুরে বুড়োরাজ মেলার নামই হয়ে গিয়েছিল ‘অস্ত্রমেলা’। মেলায় হিংসাত্মক ঘটনাও ঘটত। পরে প্রশাসন নড়েচড়ে বসায় তা বন্ধ হয়। বৃহস্পতিবার বুড়োরাজ মন্দিরে শুরু হয়েছে মেলা। অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ আটকাতে তৎপর ছিল পুলিশ। যদিও ইতিউতি রামদা, কাটারির মতো ধারালো অস্ত্র নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে কিছু ভক্তকে।যদিও সন্ধ্যা পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি। মন্দিরে বাৎসরিক পুজো দিতে হাজির হয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, হুগলি, বীরভূম-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তের কয়েক হাজার ভক্ত।
দেড় দশক আগে মেলায় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ রুখতে উদ্যোগী হয়েছিল প্রশাসন। এ বার পুজোর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বলিপ্রথার রেওয়াজ থাকায় ভক্তেরা কেবল খাঁড়া অথবা বগি নিয়ে মেলায় আসতে পারবেন। বুধবার রাত থেকে মেলা প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন ভক্তেরা।
বেআইনি কোনও অস্ত্র নিয়ে কেউ ঢুকছেন কিনা, তা দেখতে চারটি গেটে নজরদারি চালায় পুলিশ। তা সত্ত্বেও বেশ কিছু ভক্তকে লাঠি, বাঁশ, রামদা, কাটারির মতো কিছু অস্ত্র নিয়ে মেলায় ঢুকতে দেখা গিয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘কড়া নজরদারি ছিল মন্দির চত্বর এবং সংলগ্ন এলাকায়। কয়েক জনের হাতে রামদা, কাটারি থাকলেও সংখ্যায় তা ছিল অত্যন্ত কম।’’ বুড়োরাজ মন্দিরের এক সেবায়েত বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ এ বার যা ভিড় হয়েছে তা গত তিন দশকে দেখা যায়নি। প্রশাসন সজাগ থাকায় বড় অস্ত্র নিয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে কেউ ঢুকতে পারেনি।’’
বুড়োরাজ মেলায় নানা জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন কাটোয়ার বাসিন্দা সুব্রত সমাদ্দার। তাঁর দাবি, ‘‘১৫ বছর ধরে মেলায় আসছি। এ বার সন্ন্যাসী এবং ভক্তদের ভিড় সব থেকে বেশি। বিক্রিও ভাল হচ্ছে।’’ সপ্তাহ খানেক ধরে চলবে মেলা।
বুড়োরাজ মন্দিরের বিশেষ পুজো উপলক্ষে সম্প্রীতির ছবিও দেখা গিয়েছে।নবদীপ বড়ালঘাট থেকে বাঁকে করে জল নিয়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে বহু ভক্ত মন্দিরে আসেন। বুধবার রাতে প্রায় হাজার চারেক ভক্তের জন্য শ্রীরামপুর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় শিবির করেন নজরুল শেখ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। ভক্তদের তিনি জল, লাড্ডু, তরমুজের শরবত দেন। নজরুল বলেন, ‘‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। গরমের দিনে হেঁটে ভক্তেরা মন্দিরে যান। তাঁদের কষ্ট কিছুটা কমাতে কয়েক বছর ধরে শিবির করছি।’’ পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মেলাপ্রাঙ্গণে ভক্তদের কোনও অসুবিধা যাতে না হয়, তা দেখতে প্রশাসন তৎপর ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy