শেখ নিজাম আলি (ডানদিকে)। সালেহা বিবি (বামদিকে) নিজস্ব চিত্র
ইরানের কেরমানশাহ প্রদেশের দেজগাহ গ্রামের বাসিন্দা আমো হাজি স্নানঘরে ঢোকেননি প্রায় সাত দশক। কারণ তিনি স্নানে ভয় পান। কিন্তু জল পান করেন প্রচুর। এর ঠিক উল্টো ছবি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের হরিবাটি গ্রামে। সেখানকার বাসিন্দা শেখ নিজাম আলি শেখের স্নানে ভয় না থাকলেও দীর্ঘ ১০ বছর জলপান করেননি তিনি। অন্যান্য খাবার অবশ্য তিনি খান।
৫৪ বছর বয়সি শেখ নিজাম আলি মানসিক ভারসাম্যহীন। ২০ বছর ধরে এক চিলতে বাড়ির একটি ছোট ঘরে বন্দিদশায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। ঘরের মধ্যে না আছে বিছানার ব্যবস্থা, না আছে আলো। বাড়ির মধ্যেই তিনি প্রাকৃতিক কাজ সারেন। সারা শরীর জুড়ে ময়লার পুরু আস্তরণ পড়ে গিয়েছে। মলমূত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গোটা ঘরের ভিতরে। বাড়ির মেঝের মাটিতে গর্ত করেছেন তিনি নিজে হাতে।
দীর্ঘদিন দাড়ি না কামানোয় মুখে একগাল দাড়ি। কত দিন আগে তাঁর শরীর পরিষ্কার হয়েছে সেটাও দেখে বোঝা যাচ্ছে না। পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০ বছর আগে তাঁর শেষ চিকিৎসা হয়েছে। তার পর অর্থের অভাবে আর তাঁর চিকিৎসা হয়নি। এখন এক চিলতে ঘরের মধ্যেই তাঁর জীবন।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এক সময় নিজামের সুঠাম চেহারা ছিল। শরীরের প্রতি যত্নও নিতেন নিয়মিত। উচ্চমাধ্যমিকে তিনি ভাল ফলও করেছিলেন। ২৩ বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। দম্পতির এক কন্যাসন্তানের জন্মও হয়। তার পর থেকে হঠাৎই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন নিজাম। আস্তে আস্তে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।
স্ত্রী সালেহা বিবি বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন আমার স্বামী। অল্প কিছু জমি অন্যকে ভাগে দিয়ে কোনও রকমে মেয়েকে মানুষ করি। মেয়ের বিয়ের সময় সেই জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।’’ এখন অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোনও রকমে সংসার চলে। বাড়িতে কোনও পুরুষ না থাকায় পাড়া-প্রতিবেশীদের ডেকে বছরে কয়েক বার স্নান করাতে হয় নিজামকে। তাতে অবশ্য তেমন আপত্তি করেন না নিজাম। গোল বাধে জল পানের বিষয়ে। অন্যান্য খাবার খেলেও তিনি জল কেতে চান না কিছুতেই।
ফের চিকিৎসা শুরু হোক, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন নিজাম আলি চাইছেন তাঁর স্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy