Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Mental Health

চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই, গাছে বাঁধা যুবক

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক ধরে বছর পঁয়ত্রিশের খাইরুল আহসান নামে ওই যুবককে বাড়ির উঠোনে একটি গাছে বেঁধে রাখা হচ্ছে।

রায়খাঁ গ্রামে দড়িতে বাঁধা যুবক। নিজস্ব চিত্র

রায়খাঁ গ্রামে দড়িতে বাঁধা যুবক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে গাছে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের রায়খাঁ গ্রামে। ওই যুবকের পরিবারের দাবি, দারিদ্রের কারণে তাঁর চিকিৎসা করাতে পারছেন না তাঁরা। বেঁধে না রাখলে তিনি পড়শিদের উপরে চড়াও হন, বাড়ির লোকজনকেও মারধর করেন বলে অভিযোগ। সে জন্যই তাঁকে বেঁধে রাখতে বাধ্য হয়েছেন বলে পরিবারের দাবি। কেতুগ্রাম ১ ব্লক প্রশাসন জানায়, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক ধরে বছর পঁয়ত্রিশের খাইরুল আহসান নামে ওই যুবককে বাড়ির উঠোনে একটি গাছে বেঁধে রাখা হচ্ছে। তার আগে গত বছর পনেরো ধরে পায়ে শিকল পরিয়ে রাখা হত। পরিজনদের দাবি, আগে মোটামুটি শান্ত থাকলেও ইদানীং খুবই অশান্ত হয়ে উঠেছেন খাইরুল। সে কারণেই তাঁকে এখন বেঁধে রাখা হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি।

খাইরুলের বাবা ফজলুল হক শেখ বলেন, ‘‘আমার ছেলে মেধাবী ছাত্র ছিল। রাজুর বান্ধব উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে পড়ত। ২০০০ সালে মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে স্কুলের মধ্যেই ছেলে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। সেই থেকে মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।’’ তিনি জানান, জমি-জায়গা বিক্রি করে নানা জায়গায় ছেলের চিকিৎসা করিয়েছেন। মাঝে বছর তিনেক সুস্থ থাকলেও ফের সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘পাড়ার লোকজনের উপরে হামলা চালায় ও। অনেকে জখমও হয়েছেন। ঘুমন্ত অবস্থায় আমার উপরেও চড়াও হয়েছিল। বাধ্য হয়ে প্রায় পনেরো বছর ধরে পায়ে শিকল বেঁধে ঘরে রাখতাম। কিন্তু ইদানীং তাতেও বাগে আনতে পারছিলাম না। তাই পাড়ার কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সপ্তাহখানেক উঠোনে পেয়ারা গাছে বেঁধে রেখেছি।’’

ফজলুল আরও বলেন, ‘‘ছেলেকে এ ভাবে রাখতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আর কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।’’ তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য দরবার করেও সাহায্য মেলেনি। খাইরুলের মা খাইরুন্নেসা বিবি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘ভাল ছেলেটা কী ভাবে যে অসুস্থ হয়ে গেল, এখনও ঠিক হল না!’’

প্রতিবেশী মুস্তাক আহমেদের দাবি, যত দিন যাচ্ছে, তত খাইরুলের হিংস্র আচরণ বাড়ছে। তাই বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন দিনভর তাঁকে গাছে বেঁধে রাখছেন। সেই অবস্থাতেই খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু শৌচগারে যাওয়ার সময়ে তাঁর বাঁধন খুলে দেওয়া হয় বলে জানান পরিজনেরা।

কেতুগ্রাম ১ বিডিও বনমালী রায় বলেন, ‘‘ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের বিষয়ে বিশদে খোঁজ নেওয়া হবে।’’ চিকিৎসার ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Mental Health Illness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy