Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Paschim Bardhaman

মাস্কে ‘দমবন্ধ’, প্রশ্ন সচেতনতায়

আসানসোলের কোর্ট বাজারে গিয়ে দেখা গেল, থিকথিকে ভিড়। দূরত্ব-বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে কেনাকাটা।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই নিয়ম না মেনে ‘মাস্ক’ ছাড়া বাসে সওয়ার। দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে। ছবি: বিকাশ মশান

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই নিয়ম না মেনে ‘মাস্ক’ ছাড়া বাসে সওয়ার। দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড়ে। ছবি: বিকাশ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০৫:২৪
Share: Save:

রাজ্যের গণ্ডিবদ্ধ এলাকামুক্ত তিন জেলার মধ্যে ছিল পশ্চিম বর্ধমান। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার বিকেলে ছবিটা বদলে গিয়েছে। জেলায় দু’টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তার পরেও শনিবার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে করোনা-পরিস্থিতিতে নাগরিক-সচেতনতার মিশ্র ছবি দেখা গিয়েছে বলে প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ। তবে জেলাবাসীর একাংশের দাবি, পূর্ব ঘোষণা মতোই বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিনের তুলনায় এলাকায় ‘কড়া’ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনকে।

আসানসোলের কোর্ট বাজারে গিয়ে দেখা গেল, থিকথিকে ভিড়। দূরত্ব-বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে কেনাকাটা। অনেকেই ‘মাস্ক’ পরেননি। কারও বা ‘মাস্ক’ ঝুলছে থুতনিতে। কয়েকজন পুলিশকর্মী বাজারে আসা ক্রেতাদের বারবার ‘মাস্ক’ পরার অনুরোধ করছেন। কিছুক্ষণ পরে, পুলিশের একটি বড় দল কোর্টবাজারে এসে রাস্তার মাঝে ‘গার্ডরেল’ দিয়ে ‘নাকা চেকিং’ শুরু করে। ‘মাস্ক’ না পরা লোকজনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দূরত্ব-বিধি-সহ যাবতীয় সতর্কতাকে শিকেয় তুলে কেনাকাটা দেখা গিয়েছে আসানসোল বাজারেও।

একই ছবি দেখা গিয়েছে নিয়ামতপুর বাজারেও। স্টেশন রোড, লিথুরিয়া রোড ও ধর্মশালা থেকে চৌমাথা জিটি রোড পর্যন্ত এলাকায় ক্রেতাদের অধিকাংশকে ‘মাস্ক’ পরতে দেখা যায়নি। কেন এমনটা? রাজ্যেশ্বর মণ্ডল, মহম্মদ কুতুবুদ্দিন-সহ কয়েকজন ক্রেতা বলেন, ‘‘যা গরম পড়েছে, তাতে ‘মাস্ক’ পরলে দমবন্ধ হয়ে আসছে যেন!’’ এখানে সতর্কতাবিধি প্রশ্নের মুখে পড়লেও কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারের উপস্থিতি ছাড়া, পুলিশি ‘সক্রিয়তা’ নজরে পড়েনি।

পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি দুর্গাপুরের বাজারগুলিতেও সে ভাবে মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। শনিবার সকালে সিটি সেন্টারের ডেলি মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল, মুদিখানা থেকে মাছের দোকান, সর্বত্র ‘সুরক্ষা বলয়’ রয়েছে। কিন্তু তাতে কেউই দাঁড়াননি। বিক্রেতাদের অধিকাংশই ‘মাস্ক’ পরেননি। তবে ক্রেতাদের বেশির ভাগই ‘মাস্ক’ পরেছেন। একই পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে মামরা বাজারেও। বেনাচিতি বাজারে থিকথিকে ভিড় দেখা যায়নি। ক্রেতাদের মধ্যে দূরত্ববিধি মানার ও না মানার— দু’ধরনের প্রবণতাই দেখা গিয়েছে। বাজারের সব থেকে বেশি ভিড় হয় যে অংশে, সেই গুরুদ্বার রোড থেকে প্রান্তিকার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত অংশে স্বেচ্ছাসেবকদের নজরদারি দেখা গিয়েছে। দুর্গাপুর পুরসভার ২ নম্বর বরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার জানান, কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মানুষকে সচেতন করছেন।

তবে, কুলটি, বরাকরে পুলিশকে মাইকে সচেতনতা-প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছে। নাগরিক সচেতনতা দেখা গিয়েছে রূপনারায়ণপুরেও। বিডিও (সালানপুর) তপনকুমার সরকার বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে জনবহুল ও বাজার এলাকায় বিশেষ নজরদারি চলছে।’’

কিছু এলাকায় নাগরিক-সচেতনতা দেখা গেলেও, বহু জায়গাতেই তেমনটা দেখা না যাওয়ায় জেলাকে ক’দিন ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকামুক্ত’ রাখা যাবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বাসিন্দাদেরই কেউ-কেউ। যদিও জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘কিছুতেই সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘনের প্রবণতা মানা হবে না।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈনও বলেন, ‘‘মানুষকে পুরনো অভ্যাস ভুলে ‘মাস্ক’ পরতেই হবে। তা না হলে, জরিমানা-সহ কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Paschim Bardhaman Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy