এই ভাবে পারাপার। আশঙ্কা বিপত্তির। —নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল শিল্পাঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম দামোদরের খেয়া পারাপার। প্রতিদিন অন্তত দশ হাজার যাত্রী নৌকায় পারাপার করেন। কিন্তু কারও গায়েই লাইফ জ্যাকেট দেখা যাচ্ছে না বলে পর্যবেক্ষণ ওয়াকিবহাল মহলের। যাত্রীদের অভিযোগ, মাঝিরা লাইফ জ্যাকেট না দেওয়াতেই ঝুঁকি নিয়ে ভরা দমোদর পেরোতে হচ্ছে।
বার্নপুরের নেহরু পার্ক লাগোয়া দামোদরে ভূতাবুড়িতে রয়েছে খেয়াঘাট। এই ঘাটটি আসানসোল শিল্পাঞ্চলের ডিহিকা, বার্নপুর, হিরাপুর, কালাঝরিয়া, বাঁকুড়ার শালতোড়ার ঈশ্বরদা, কেষ্টপুর, দিঘি, নারায়ণপুর, সাগরডিহি-সহ ২৫টি গ্রামের বাসিন্দারা ব্যবহার করেন।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রতিটি নৌকাতেই ঠাসা ভিড়। আটটি নৌকা চলাচল করছে। কিন্তু যাত্রীদের গায়ে নেই লাইফ জ্যাকেট। নিত্যযাত্রী তথা সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী মন্টু অধিকারী বলেন, “উপায় নেই। মাঝিরা জানাচ্ছেন, লাইফ জ্যাকেট নেই। এই ভাবেই পারাপার করতে হবে।” একই অভিযোগ আরও কয়েক জন যাত্রীরও।
অথচ, এই খেয়া-পথ ব্যবহারও করতে হয় বাসিন্দাদের। কারণ, তা না করলে ডিসেরগড় বা রানিগঞ্জের মেজিয়া সেতু দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হবে। তাতে প্রায় ৬০ কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরতে হবে। সেটা খেয়া পারাপারের ক্ষেত্রে মেরেকেটে আট কিলোমিটার। যদিও, নৌকা চালক প্রদীপ্ত ঘোষ দাবি করেন, “বিষয়টা বিপজ্জনক ঠিকই। কিন্তু একটি নৌকায় ৩৫-৪০ জন যাত্রী পারাপার করেন। এত সংখ্যক লাইফ জ্যাকেট দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।” মাঝিরা আরও জানান, যাত্রী পারাপার করতে দশ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হয়। ফলে, ওই টাকায় নৌকা চালানোর পরে পর্যাপ্ত সংখ্যক জ্যাকেট কেনাটাই তাঁদের পক্ষে সমস্যার।
সাধারণত বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে বর্ষার জলে পূর্ণ থাকে দামোদর। এই সময়ে খেয়া পারাপার চলে। নভেম্বরের শেষ থেকে নদে গোড়ালি ভেজা জল থাকে। তখন অস্থায়ী সেতু বানিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ‘টোল’ নিয়ে নদ পারাপার করানো হয়। দু’চাকার গাড়িও যাতায়াত করে। প্রতি বছর বর্ষায় জলের তোড়ে সেতুটি ভেঙে যায়। তখন খেয়া পারাপার শুরু হয়।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দফতরের নোডাল আধিকারিক ও এগ্জ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি বিপজ্জনক। অভিযোগ পেয়েছি। পুজোর ছুটি শেষ হলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই প্রবণতা বন্ধ করা হবে। অন্ডাল ও জামুড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকায় অজয় পারাপার করার ঘটনা রোখা গিয়েছে।”
এ দিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বিষয়টি দেখার কথা পুলিশের। কিন্তু হিরাপুর থানার পুলিশকে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায় না বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, “আমরা বিষয়টি দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy