Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রৌঢ়ের অপমৃত্যু, চাপানউতোর

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সওয়া ১০টা নাগাদ গ্রামের দিঘিরপাড়ে নিজের চা-মিষ্টির দোকানের দরজার সামনে গোপালবাবুকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা।

বর্ধমান-আরামবাগ রোডে খণ্ডঘোষের বাদুলিয়ায় পথ অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান-আরামবাগ রোডে খণ্ডঘোষের বাদুলিয়ায় পথ অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খণ্ডঘোষ শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

এক প্রৌঢ়ের অপমৃত্যু হয়েছে খণ্ডঘোষের বেরুগ্রামে। শুক্রবার রাতের ঘটনা। ঘটনার পরেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের অভিযোগ, গোপাল পাল (৫৮) নামে তাঁদের সমর্থককে ‘খুন’ করেছে তৃণমূল। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাবি, ওই ব্যক্তি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সওয়া ১০টা নাগাদ গ্রামের দিঘিরপাড়ে নিজের চা-মিষ্টির দোকানের দরজার সামনে গোপালবাবুকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা।

এর পরেই এলাকাবাসীর একাংশ সন্দেহ করেন, এই ঘটনায় তৃণমূল জড়িত। কারণ, এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার তাঁরা এলাকায় তৃণমূলের ‘অত্যাচারের’ প্রতিকারের জন্য দাবি জানানোয় রাজ্যের শাসক দল বেরুগ্রামের দক্ষিণপাড়ার যে কোনও বাসিন্দাকে ‘খুনের’ হুমকি দেয়। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে রাতে গোপালবাবুর দেহ ও দেহের উপরে গামছা দেখে এলাকাবাসীর একাংশ অভিযোগ করেন, প্রৌঢ়কে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এর পরেই বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, “পরিকল্পিত ভাবে তৃণমূল আমাদের সমর্থককে খুন করেছে।’’ তবে বিজেপি আঙুল তুললেও বিষয়টির সঙ্গে দলের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘ওই প্রৌঢ় খুন হননি। তিনি দোকানের দরজা বন্ধ করার সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তার পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।’’

শোকগ্রস্ত পরিবার। ডান দিকে, মৃত গোপাল পালের দোকান। ছবি: উদিত সিংহ।

যদিও পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় শনিবার দাবি করেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জেনেছি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। তবে রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।’’ তবে পুলিশের দাবি উড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “পুলিশ যাই বলুক, ওই প্রৌঢ়কে খুনই করা হয়েছে।’’

গোপালবাবুর মৃত্যু কেন, তা নিয়ে সন্দিহান পরিবারের লোক জনও। গোপালবাবুর মেয়ে সাধনা দাবি করেন, ‘‘বাবা সক্রিয় রাজনীতি করতেন না। তবে কোনও দলের সমর্থক হতেই পারেন। সরল মানুষটাকে কেন যে খুন করা হল, বুঝছি না।’’ গোপালবাবুর ছেলে সঞ্জয় পুলিশের কাছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে অবশ্য জানান, বাবা দীর্ঘদিন বিজেপি করতেন। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, গোপালবাবু ও তাঁর পরিবার কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই যুক্ত নন।

শনিবার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দিঘিরপাড়-বহরাগড়িয়া এলাকার দোকানপাট বন্ধ। স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলেও পড়ুয়ারা আসেনি। মৃত প্রৌঢ়ের দোকানের সামনে ভিড়ের জটলা। কিছু দূরে পুলিশের গাড়ি। মাটির বাড়ি-অ্যাসবেস্টসের ছাউনির নীচে দাঁড়িয়ে গোপালবাবুর অন্তঃসত্ত্বা বৌমা রিয়া পাল বলেন, “কেন এ রকম ঘটল, বুঝতে পারছি না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Khandaghosh TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy