কালনায় তৃণমূলের সভাস্থলে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
মন্দির-শহর পর্যটনের কেন্দ্র হয়ে উঠুক, অনেক দিনের দাবি কালনার বাসিন্দাদের। সে কথাই এ বার শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। মঙ্গলবার কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুর রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের মাঠে জনসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী কালনার সমৃদ্ধ ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে এই এলাকাকে ‘সর্বধর্মের পীঠস্থান’ বলে দাবি করলেন। সেই সঙ্গে কালনা-শান্তিপুরের মাঝে ভাগীরথীতে সেতু তৈরি হয়ে গেলে, এলাকার আরও উন্নতি হবে বলেও তাঁর আশ্বাস। যদিও গোটা বিষয়টি ভোটের মুখে চমক ছাড়া, কিছু নয় বলে দাবি বিজেপির।
এ দিন বক্তব্যের শুরুতেই মমতার গলায় শোনা যায় কালনার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির কথা। তিনি বলেন, ‘‘প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে অম্বিকা কালনার নাম পাওয়া যায়। এক সময়ে তাম্রলিপ্ত সাম্রাজ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ছিল। কালনাকে মন্দিরের শহরও বলা হয়। অসংখ্য প্রাচীন মন্দিরে টেরাকোটার কারুকাজ রয়েছে। চৈতন্যদেবের জীবদ্দশায় নির্মিত একমাত্র মহাপ্রভু মন্দির রয়েছে কালনায়।’’ এলাকার বেশ কয়েকটি মন্দিরের নাম নেওয়ার পরে তিনি বলেন, ‘‘সর্বধর্ম সমন্বয়ের এটা একটা বড় পীঠস্থান। কালনা খ্রীষ্টধর্মের একটি শাখারও গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। আবার রয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির। দাঁতনকাঠিতলা মসজিদ প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে। কালনায় এত মন্দির যে মন্দির-তীর্থ বলা যেতে পারে।’’
ভাগীরথীতে সেতু তৈরির প্রকল্পের কথা তুলে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘কালনাকে শান্তিপুর ও নবদ্বীপের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য ১,১০০ কোটি টাকার সেতু করে দেওয়া হচ্ছে। এই সেতু তৈরি হলে কয়েকমিনিটের মধ্যে শান্তিপুর, নবদ্বীপে যাওয়া যাবে। ইস্কনের নতুন মন্দির গড়ার জন্য ৭০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। নবদ্বীপকে হেরিটেজ শহর করে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে কালনার জন্যও নিশ্চয় ভাবব।’’
সভা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কালনার বধূ পুতুল ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় অনেক কিছুই রয়েছে। পর্যটকেরাও আসেন। তবে সরকারি ভাবে কালনাকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে পর্যটক বাড়বে। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে কালনার পুরাতত্ত্বগুলির কথা বলেছেন, তাতে আশা দেখছি।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথেরও দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য থেকেই বোঝা গিয়েছে, কালনার জন্য ভবিষ্যতে ভাল কিছু অপেক্ষা করছে।’’ কালনা পুরসভার প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া আলো লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরে, আরও সরকারি প্রকল্প মিলবে বলে আমাদের ধারণা।’’
বিজেপি অবশ্য বিষয়টিকে ‘নির্বাচনী চমক’ বলে দাবি করেছে। দলের কালনার নেতা ধনঞ্জয় হালদারের কথায়, ‘‘সেতুর জমি কেনার কাজ শেষ হয়নি এখনও। রাজ্য সরকার বছর ছয়েক আগে রাজবাড়ি ও ১০৮ শিবমন্দিরে আলোছায়া প্রকল্প করেছিল। তার বেশিরভাগ এখন জ্বলে না। মুখ্যমন্ত্রীর কালনার মন্দির নিয়ে এখন এত কথা নির্বাচনী চমক ছাড়া, কিছু নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy