Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
MAMATA BANERJEE

প্রভাত, দিলীপকে বার্তা মমতার

দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তিকেও ‘সতর্ক’ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাঁ দিক থেকে, দিলীপ অগস্তি, প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।

বাঁ দিক থেকে, দিলীপ অগস্তি, প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:১৫
Share: Save:

এখন থেকে দলের শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব সামলাবেন আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালই। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে শ্রমিক সংগঠনের বিষয়ে না ঢোকার ‘পরামর্শ’ও দেন তিনি। সংগঠনের সমর্থকদের একাংশের মতে, এই ‘ঘোষণা’ আদতে প্রভাতবাবু ও বিশ্বনাথবাবুর অনুগামীদের মধ্যে বিবাদে রাশ টানার বার্তা।

বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠকের শেষ দিকে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘‘দুর্গাপুর-আসানসোলে ট্রেড ইউনিয়ন কে কে করেন?’’ একা প্রভাতবাবু উঠে দাঁড়ান। এর পরেই মমতা তাঁকে বলেন, ‘‘প্রভাত, তোমার নামে আমি কিন্তু অনেক অভিযোগ পেয়েছি। এর জন্য কিন্তু দল, সরকার ‘সাফার’ করবে না। যদি পারো, নিজেকে শুধরে নাও। তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরে আমি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে এখানে ট্রেড ইউনিয়ন দেখার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তা-ও তুমি শোধরাওনি। তুমি আর শ্রমিকদের ব্যাপারে ঢুকবে না।’’

ঘটনাচক্রে, এই দুই নেতার মধ্যে ‘বিবাদ’ গত কয়েক বছরে বারবার প্রকাশ্যে এসেছে বলে জানাচ্ছেন সংগঠনেরই নেতা, কর্মীদের একাংশ। একটানা কয়েক বছর ধরে সংগঠনের জেলা সভাপতি ছিলেন দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ প্রভাতবাবু। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরের দু’টি আসন হাতছাড়া হওয়ার পরে দল ও শ্রমিক সংগঠনের সব কমিটি ভেঙে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ২০১৮-র জুনে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি করেন তৃণমূলনেত্রী। তার পরেই প্রাক্তন সভাপতির অনুগামীদের সঙ্গে নতুন সভাপতির অনুগামীদের বিবাদ শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। কয়েকটি বেসরকারি কারখানায় বিশ্বনাথবাবু কিছু কর্মসূচি নিলেও প্রধান দুই রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ডিএসপি ও এএসপি-র আইএনটিটিইউসি সংগঠনের রাশ থেকে যায় প্রভাতবাবুর অনুগামীদের হাতেই।

এ দিকে, লোকসভা ভোটের প্রচারে এসেও বিশ্বনাথবাবুর প্রশংসা করেন মমতা। কিন্তু লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হারের পরে কর্মসূচিতে দেখা যায়নি বিশ্বনাথবাবুকে। এমনকি, এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দুর্গাপুরে আয়োজিত আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনের সভায় বা মিছিলেও তাঁকে হাঁটতে দেখা যায়নি। তবে প্রভাতবাবু ছিলেন সামনের সারিতেই। বুধবার অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর সিএএ ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে বেনাচিতির পদযাত্রায় বিশ্বনাথবাবু সারা রাস্তায় ছিলেন দলনেত্রীর ঠিক পাশেই।

এ দিন নেত্রীর নির্দেশের পরে প্রভাতবাবু বলেন, ‘‘দলের শৃঙ্খলাবদ্ধ কর্মী আমি। নেত্রীর নির্দেশ মতোই চলব।’’ এ দিকে, বিশ্বনাথবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘জেলার শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে, তাঁদের পাওনাগণ্ডা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো কাজ করে যাব।’’

পাশাপাশি, দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তিকেও ‘সতর্ক’ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দিলীপবাবুকে বলেন, ‘‘আপনি দীর্ঘদিন প্রশাসনে কাজ করেছেন। কিন্তু পুরসভায় মানুষের কাজ করতে হয় প্রতিদিন। আপনি যদি আপনার প্রশাসনিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জন্য কাজ করেন তা হলে মানুষের সুবিধা হবে। এটা করব না, এটা হবে না, এমন ভাবলে চলবে না। ছোটখাটো অনেক কাজ রয়েছে। যেমন, ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এগুলো মিটিয়ে ফেলুন।’’ এর পরেই মন্ত্রী মলয় ঘটককে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী দলের জেলা পর্যবেক্ষক দীপ্তাংশু চৌধুরী, বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালকে নিয়ে মেয়রের সঙ্গে বসে দুর্গাপুর পুরসভা এলাকার সমস্যাগুলি মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। বিশ্বনাথবাবুকে বিধানসভায় গিয়ে পরে কী ফল হল তা জানানোরও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy