২১ জুলাইয়ের সমাবেশের মঞ্চে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই
২১ জুলাইয়ের সমাবেশের মঞ্চ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলন আরও জোরদার করার বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই বার্তাকে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানে চিত্তরঞ্জন রেল কারখানাকে ‘কর্পোরেট’ করা ও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় আন্দোলনে নামা নানা শ্রমিক সংগঠন। এর ফলে আন্দোলনে আরও গতি আসবে বলে মনে করছেন শ্রমিক-কর্মীদের অনেকেও।
এ দিন কলকাতায় ওই সমাবেশে মমতা কেন্দ্র ৪২টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ করে দিতে চাইছে অভিযোগ করে বলেন, ‘‘বিএসএনএল থেকে চিত্তরঞ্জন লোকমোটিভ, অ্যালয় স্টিল থেকে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, সব জায়গায় শ্রমিক-কর্মীরা কাঁদছেন।’’ এর প্রতিবাদে দলের শ্রমিক নেতৃত্বকে লাগাতার আন্দোলন করার নির্দেশও দেন তিনি।
চিত্তরঞ্জন রেল কারখানায় ১৩টি শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘সেভ সিএলডব্লিউ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ ইতিমধ্যে আন্দোলনে নেমেছে। আলাদা ভাবে বিক্ষোভ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে তৃণমূলও। এ দিন মমতার বক্তব্যের পরে ওই যৌথ কমিটির আহ্বায়ক সৌমেন দাস বলেন, ‘‘আমরা এক মাস ধরে লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলন করছি। প্রত্যেকে আমাদের আন্দেলনে শামিল হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন, এই আশা রাখি।’’
‘ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’র জোনাল সম্পাদক স্বপন লাহা দাবি করেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস, একক ভাবে আন্দোলন করে এই কারখানা বাঁচানো যাবে না। তাই সব শ্রমিক সংগঠন মিলে যৌথ আন্দোলনে নেমেছি। মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনাকে স্বাগত। তবে জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির নেতৃত্বেই আন্দোলন করা উচিত।’’ সিটুর জেলা সম্পাদক তথা আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীরও বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে ভরাডুবির হাত থেকে রক্ষা করতে শাসক দল পথে নামবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে সেটা অবশ্যই যৌথ কমিটির নেতৃত্বে হোক। আমরা রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছি। মুখ্যমন্ত্রী সে বিষয়েও ভাবুন।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বিষয়ক (ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স) ক্যাবিনেট কমিটি ২০১৬ সালে এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করার পরে ২০১৭ সালের গোড়া থেকে যৌথ ভাবে আন্দোলনে নামে সিটু এবং আইএনটিইউসি। পরে সিটু, আইএনটিইউসি, বিএমএস-সহ নানা শ্রমিক সংগঠন যৌথ মঞ্চ গড়ে আন্দোলন চালিয়ে যায়। আলাদা ভাবে আন্দোলনে নেমেছে আইএনটিটিইউসি।
রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে দুর্গাপুরের আইএনটিটিইউসি নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র সিদ্ধান্ত বাতিল না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’ সিটু নেতা পঙ্কজ রায়সরকার অবশ্য অভিযোগ করেন, ‘‘সুজন চক্রবর্তী এই বিষয়টি বিধানসভায় তুলেছিলেন। দুর্গাপুরের বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন। কোনও সাড়া মেলেনি।’’ আইএনটিটিইউসি নেতা বিকাশ ঘটকের দাবি, ‘‘বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নীতি আয়োগ। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে সদস্য হিসেবে রয়েছেন। রাজ্য সরকার দৃঢ় পদক্ষেপ করলে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হবে না। আমরা চাই, কারখানা বাঁচাতে সবাই একজোট হোন।’’ আরএসএস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধে। এই নীতির বিরুদ্ধে যাঁরা থাকবেন, প্রত্যেককেই স্বাগত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy