শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র।
সম্পর্কে টানাপড়েনের জেরে এক বিবাহিতা যুবতীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে ‘প্রেমিকে’র বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের চন্দনপোতা গ্রাম। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে বন্যা মণ্ডলকে (২০) খুন, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাঁর মাকে হুমকি দেওয়ার পরে, এলাকা ছাড়েন দীপু হালদার (২৭) নামে ওই যুবক। পরে পূর্বস্থলীর ঘুনি এলাকা থেকে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে তাঁর দেহ। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘মন্তেশ্বর থানায় খুনের এবং পূর্বস্থলী থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’’
বছর পাঁচেক আগে পূর্বস্থলীর সাতপোঁতা গ্রামের গৌরাঙ্গ মণ্ডলের সঙ্গে মন্তেশ্বরের বন্যার বিয়ে হয়। বছর তিনেকের সন্তানও রয়েছে ওই দম্পতির। পেশায় রাজমিস্ত্রি গৌরাঙ্গ কেরল-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বছরভর ঘুরে কাজ করেন। নিহতের পরিবারের দাবি, বছরখানেক আগে শ্বশুরবাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাওয়া মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা দীপুর সঙ্গে আলাপ হয় বন্যার। সেখান থেকে সম্পর্কের শুরু। মাস সাতেক আগে দীপুর সঙ্গে কান্দিতে চলে যান বন্যা। সে সময় বন্যার পরিবারের তরফে একটি অপহরণের মামলাও দায়ের করা হয়। মাস চারেক আগে বন্যা ফেরেন বাপের বাড়িতে। তড়িৎবাবুর দাবি, ‘প্রেমিকের’ বাড়ি থেকে ফেরার পরে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে আবার যোগাযোগ হয় মেয়ের।
বন্যার বাবা তড়িৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘দিনকয়েক আগে জামাই আমাদের এখানে একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিল। মেয়ের সঙ্গে ছবি তোলে। দু’জনে সে ছবি ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় দিয়েছিল। এ দিন সকালে শ্বশুরবাড়িতে ফেরার কথা ছিল মেয়ের।’’ তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আত্মীয়দের সঙ্গে শুয়েছিলেন। অন্য ঘরে ছিলেন বন্যা। এ দিন ভোরে আচমকা ঘুম ভাঙে তড়িৎবাবুর। মেয়ের চিৎকারও কানে আসে তখনই। তড়িৎবাবুর অভিযোগ, ‘‘ঘরে ঢুকে দেখি, ধারাল ছুরি দিয়ে মেয়েকে কোপাচ্ছে ছেলেটা। ওর হাত থেকে ছুরিটা কাড়ার চেষ্টা করি।’’ বন্যার মা সুলতা মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘আমার কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে ছেলেটা বলল, ‘আটকালে তোকেও প্রাণে মেরে ফেলব’। চোখের সামনে ওর ছুরির ঘায়ে মেয়েটা শেষ হয়ে গেল!’’ চিৎকার শুনে চলে আসেন অন্য আত্মীয়েরা। কিন্তু আর কেউ বাধা দেওয়ার আগেই দীপু ছুটে পালায় বলে দাবি বন্যার বাবা-মায়ের।
পুলিশ সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তের পরে তাদের অনুমান, স্বামীর সঙ্গে বন্যার সাম্প্রতিক ছবি দেখে খেপে ওঠে দীপু। এ দিন ভোরে সে বন্যাকে ফের বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। তিনি রাজি না হওয়ায় খুন করা হয়। পরে দীপু আত্মহত্যা করে। তার কাছ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি মিলেছে। তবে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy