চিত্তরঞ্জন থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয় শনিবার। নিজস্ব চিত্র
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচানো এবং শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবিতে কলকাতার উদ্দেশে ‘লং মার্চ’ শুরু হল শনিবার। বাম ও কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনগুলির উদ্যোগে আয়োজিত এই পদযাত্রা ১২ দিনে প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে পৌঁছবে কলকাতায়। সেখানে ১১ ডিসেম্বর এই সব দাবিতে সমাবেশ হবে।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার গেট থেকে শুরু হয় পদযাত্রা। উপস্থিত ছিলেন সিটুর রাজ্য সম্পাদক শ্যামল চক্রবর্তী, আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি কামালউদ্দিন কামার, রেলের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া-সহ শ্রমিক সংগঠনের নেতানেত্রীরা।
শ্যামলবাবুর বক্তব্য, ‘‘গত কয়েক বছরে শিল্পাঞ্চলের নানা কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানাকে কর্পোরেট করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে হলে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’’ বাসুদেববাবুও দাবি করেন, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধের চক্রান্ত চলছে। তা রুখতে হবে।’’ আইএনটিইউসি নেতা কামালউদ্দিন কামারের অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসের জামানায় ইস্কো কারখানার পুনরুজ্জীবন হয়েছে। সেই সংস্থাকেও বেসরকারি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এর ফলে, কর্মী সঙ্কোচনের সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে।’’ শ্রমিক নেতারা জানান, শিল্পের এই দুরবস্থার কথা রাজ্যের মানুষের কাছে তুলে ধরতেই পদযাত্রা করা হচ্ছে।
এ দিন সকালে পদযাত্রার সূচনায় চিত্তরঞ্জন কারখানার শ্রমিক-কর্মীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বন্ধ হিন্দুস্তান কেব্লস ও কুলটি কারখানার অনেক কর্মীও। বন্ধ কারখানা খোলা ও শিল্পের জমিতে শিল্প গড়ার দাবি জানান তাঁরা। লং মার্চ কর্মসূচির আহ্বায়ক তথা আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, গত কয়েক দশকে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রায় ১৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা। নতুন কোনও শিল্প গড়ে ওঠেনি। আইএনটিইউসি-র খনিশ্রমিক সংগঠনের নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘১৬টি খনি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কয়লা মন্ত্রক। ইতিমধ্যে ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার মাউথডিহি খনির কাজ ১৫ জানুয়ারি থেকে বন্ধ করার বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছে। একের পরে এক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সংস্থা বন্ধ ও রুগ্ণ হয়ে পড়ায় কর্ম সঙ্কোচন হয়েছে। শিল্পাঞ্চলের অর্থনীতি পর্যুদস্ত হয়েছে।’’
পদযাত্রীদের ফুলের তোড়া দিয়ে এ দিন সকালে অভিনন্দন জানান চিত্তরঞ্জন কারখানার শ্রমিক-কর্মীরা। শ্রমিক নেতৃত্ব জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পদযাত্রা চলবে। বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে কলকাতায় যাওয়ার পথে পদযাত্রীদের জন্য বাম ও কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে রাতে থাকার বন্দোবস্ত থাকছে। চিত্তরঞ্জন থেকে কলকাতা, পুরো রাস্তা হাঁটবেন দু’শো জন পদযাত্রী। তাঁদের সঙ্গে নানা এলাকায় যোগ দেবেন স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরা।
সিটু সূত্রের দাবি, শ্রমিক, ঠিকাশ্রমিক, উচ্ছেদ হওয়া শ্রমিক, ছাত্র, যুব-সব অংশের প্রতিনিধি রয়েছেন এই দলে। ১১ ডিসেম্বর কলকাতায় সভায় মূল বক্তা থাকবেন সিটুর সর্বভারতীয় সভাপতি তপন সেন এবং আইএনটিইউসি-র সর্বভারতীয় সভাপতি সঞ্জীব রেড্ডি। সালানপুরে এ দিন পদযাত্রায় যোগ দিয়েছেন পুরুলিয়ার থেকে আসা সিটু এবং আইএনটিইউসির কর্মীরা। মঙ্গলবার সকালে লং মার্চ দুর্গাপুর থেকে রওনা হওয়ার সময়ে তাতে যোগ দেবেন বাঁকুড়ার লোকজন। বীরভূম থেকে মানুষজন যোগ দেবেন পানাগড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy