কবে চলবে বাস, প্রশ্ন জেলায়। আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র
বাস নামল না আসানসোল মহকুমায়। বৃহস্পতিবারেও মহকুমার নানা প্রান্তে যাত্রী-ভোগান্তি ছিল অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বাস মালিকদের টানাপড়েনও দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি, বাস মালিকেরা জেলা প্রশাসনের কাছে কয়েকটি বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন।
বাস ও মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, আসানসোল মহকুমায় প্রায় সাড়ে চারশো মিনিবাস চলে। কর্মী সংখ্যা প্রায় ১,৫৫০ জন। বড় বাসের সংখ্যা প্রায় ৪২০টি। কর্মী সংখ্যা, প্রায় ১,৩০০। গত দু’মাস ধরে বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় পরিবহণ কর্মীরা কর্মহীন। প্রথমে অর্ধেক আসনে, পরে সব আসনে যাত্রী নিয়েই বাস চালানোর কথা বলে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পরেও আসানসোল মহকুমায় বেসরকারি বাস, মিনিবাস পথে নামেনি।
কেন এই পরিস্থিতি? ‘আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘ভাড়াটা মুখ্য বিষয় নয়। মালিকদের তরফে জেলাশাসকের কাছে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তিনি এখনও বৈঠক ডাকতে পারেননি। আলোচনা ছাড়া, বাস চালানো সম্ভব নয়।’’ একই কথা জানান ‘আসানসোল বাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর কোষাধ্যক্ষ বিজন মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।’’
বাস ও মিনিবাস মালিকেরা কী-কী বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চান, তা-ও জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, প্রথমত, জীবাণুনাশক ছড়ানোর বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাসের কর্মীদের ‘পিপিই কিট’ দিতে হবে প্রশাসনকে। তৃতীয়ত, মালিক ও যাত্রীদের কথা ভেবে ন্যূনতম ও সর্বোচ্চ ভাড়া ঠিক করতে হবে। চতুর্থত, বাস রুটে কোনও অটো ও টোটো যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে না, সেটা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। পঞ্চমত, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের কাজে বাস ও মিনিবাস নেওয়া হলেও সে ভাড়া এখনও মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ। তা দ্রুত মেটানোর দাবি জানানো হয়েছে। বড়বাস মালিক সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক রাজেন মুখোপাধ্যায় জানান, জেলার সাতটি বাস মালিক সংগঠন একজোট হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়ছেন জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দারা। রানিগঞ্জের কুমারবাজারের বাসিন্দা অলোক চট্টোপাধ্যায়, জামুড়িয়ার বালানপুরের অরূপ সিংহ, পাণ্ডবেশ্বরের দীপক পাল ও অণ্ডালের ফৈয়জ আহমেদরা জানান, তাঁরা বিভিন্ন কাজে বাইরে যেতে পারছেন না। কারণ, টোটো, অটোতে চেপে স্বল্প দূরত্বেই যাওয়া যাচ্ছে। বেশি দূরে যেতে হলে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিতে হচ্ছে। পরিবহণ স্বাভাবিক করতে রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তের প্রস্তাব, ‘‘জেলায় আপাতত সরকারি বাস চালিয়ে সমস্যা মেটানো উচিত। তার পরে, বেসরকারি বাসের কর্মীদের জন্যও ১০ লক্ষ টাকা বিমা চালু করুক সরকার। নিয়মিত জীবাণুনাশক ছড়ানোর ব্যবস্থাও করতে হবে প্রশাসনকে।’’
জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাশমুন্সী বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পাঠানোর কাজে ব্যস্ত আছি। তাই বৈঠকের সুযোগ পাচ্ছি না। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের ভিত্তিতে মালিক সংগঠনগুলিকে আপাতত বাস চালানোর অনুরোধ করা হয়েছে। তার পরে ওঁদের দাবিগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছি। কিন্তু তাঁরা তা শুনছেন না। এর পরে কী ভাবে বাস চালানো যায় সে পরিকল্পনা নিচ্ছি।” যদিও জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির আশ্বাস, ‘‘বাস মালিকদের বৈঠকে ডাকতে উদ্যোগী হয়েছি। জেলা জুড়ে দ্রুত বাস চলাচল শুরু করার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy