তখন দুপুর ১টা। দোকান খুলবে বিকেল ৪টে নাগাদ। ব্যাগ রেখে ছায়ায় অপেক্ষায় উপভোক্তারা। নিজস্ব চিত্র
জেলার তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তাই সকাল-সকাল রেশন তুলে বাড়ি ফেরার লক্ষ্যে মানুষজন কাকভোরে লাইনে এসে দাঁড়াচ্ছেন দোকানগুলিতে। তাই উপভোক্তারা বিকেলের দিকে রেশন দেওয়ার সময় বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। তবে এই বিষয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন।
করোনাকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে বিনামূল্যে রেশন সরবরাহের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার পরেই জেলা জুড়ে রেশন দোকানগুলিতে ভিড় উপচে পড়েছে। যদিও সরকারের তরফে প্রথম থেকেই দোকানের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। প্রত্যেক দোকানের সামনে গ্রাহকদের দাঁড়ানোর জন্য চক দিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে গোলাকার চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়েছে। সকালের দিকে এই দূরত্ব মেনে চলা হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আর সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। একই অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরেও।
রেশন দোকান মালিকেরা জানান, সারা মাস ধরে জিনিস মিলবে বলে জানিয়ে দেওয়ার পরেও, গ্রাহকেরা এক সঙ্গে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। দূরত্ব বজায় রাখতে এক-এক সময় সমস্যা হচ্ছে। এসবি মোড়ের একটি রেশন দোকানে গিয়ে দেখা গেল, সকাল ৮টা থেকে রেশনের মাল বিলি করা হচ্ছে। দুপুরে বন্ধ। ফের বিকেল ৪টে থেকে রেশন দেওয়া হচ্ছে। রেশন দোকানের মালিক পঞ্চানন চক্রবর্তী জানান, ভোর ৫টায় এসে লাইন সামলাতে হচ্ছে। সকালে ৫০ জন এবং বিকেলে ৩০ জনকে রেশন দেওয়া হবে বলে বোর্ডে লিখে দেওয়া হয়েছে। কারণ, এক মাসের রেশন সামগ্রীর পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে, ওজন করতে সময় লাগছে।
নির্দিষ্ট সুরক্ষা বলয় কেটে দেওয়া হয়েছে গ্রাহকদের জন্য। সেই বলয়ে থলি রেখে দিয়ে পাশে কোনও দোকানের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন গ্রাহকেরা। সিনেমাহল রোডের বধূ রাজকুমার দেবী জানান, স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন। এখন কাজ নেই। তাই
রোদ উপেক্ষা করেও তিনি অপেক্ষা করছেন রেশনের জন্য। চাল পেলে তবে রান্না হবে রাতে।
তবে জটলা এড়াতে শুক্রবার নতুন পদ্ধতি চালু করেছেন আসানসোল শহরের বেশ কয়েকটি রেশন দোকানের মালিক। তাঁরা সকালে এসে লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহকদের হাতে নম্বর লেখা কুপন দিচ্ছেন। সেই কুপন হাতে নিয়ে গ্রাহকেরা দোকানের সামনে জটলা করছেন না। খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার সময়ে কুপন ধরে ডাকা হচ্ছে। গ্রাহকেরা একে একে গিয়ে রেশন নিচ্ছেন।
অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি জানিয়েছেন, জেলার প্রত্যেকে এই পদ্ধতি মানলে দোকানের সামনে গ্রাহকদের জটলা হবে না। উপভোক্তারাও নিজেদের পছন্দ মতো জায়গায় দাঁড়াতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁদেরও দ্রুত বিনামূল্যে রেশন সরবরাহের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ খাদ্য দফতরের আসানসোল মহকুমা নিয়ামক সৌমিত্র মাইতি জানান, যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁদের ছয় মাসের রেশন দেওয়ার জন্য কুপন দেওয়া হবে। আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে তা বিলি করা হবে।
এ দিকে, দুর্গাপুরের চণ্ডীদাসের সেক্টর মার্কেটে একটি রেশন দোকান থেকে চাল ও গম পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের একাংশের দাবি, পাশের আটা চাকিতে গম পাচার করা হচ্ছিল। রেশন দোকানে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (সড়ক) অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেশনে কোনও রকম দুর্নীতি মানা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy