Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Kalna

উন্নয়ন নয় দুর্নীতি হচ্ছে, সরব কাউন্সিলরেরা

পুরভোটে ১৮টি আসনের মধ্যে ১৭টিতে জেতে তৃণমূল। একটি আসন পায় সিপিএম। তবে পুরপ্রধান কে হবে, তা নিয়ে শুরু হয় মতানৈক্য।

বৈঠকের পরে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা। নিজস্ব চিত্র

বৈঠকের পরে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:০২
Share: Save:

পুরসভার বৈঠকের পরে দলেরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কালনার একগুচ্ছ কাউন্সিলর। ওই তৃণমূল কাউন্সিলারদের অভিযোগ, দুর্নীতি, টাকা নিয়ে শংসাপত্র দেওয়ায় যুক্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কাজ করছেন পুরপ্রধান। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা কঠোর পদক্ষেপ নেবেন বলেও দাবি করেন। তবে কী সেই পদক্ষেপ হবে, তা খোলসা করেননি তাঁরা। পুরপ্রধান অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, দল যা বলবে, তাই মেনে চলবেন তিনি।

পুরভোটে ১৮টি আসনের মধ্যে ১৭টিতে জেতে তৃণমূল। একটি আসন পায় সিপিএম। তবে পুরপ্রধান কে হবে, তা নিয়ে শুরু হয় মতানৈক্য। শাসক দলের তরফে ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত আনন্দ দত্তর নাম ঘোষণা করা হয়। তবে গোড়ায় তাঁকে মানতে চাননি বেশির ভাগ কাউন্সিলর। পুরপ্রধান নির্বাচনের একটি সভায় গন্ডগোল ছড়ায়। যদিও দলের ঘোষিত প্রার্থীই পুরপ্রধান হন। তবে দিন গড়ালেও পুরপ্রধানের সঙ্গে ১২ জন কাউন্সিলরের দূরত্ব ঘোচেনি। বোর্ড অব কাউন্সিলরদের বৈঠকেও মাঝেমধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সম্প্রতি একটি বৈঠকে কাপ ছোড়াছুড়ির অভিযোগ ওঠে। তার জেরে শহর সভাপতি তথা কাউন্সিলার রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এক কাউন্সিলরকে শোকজ়ও করা হয়।

এ দিন প্রাক বাজেট নিয়ে বৈঠক ছিল পুরসভায়। সেখান থেকে বেরিয়ে পুর ভবনের বিপরীতে চৈতন্যদেবের মূর্তির নীচে জমা হন উপ-পুরপ্রধান তপন পোড়েল-সহ ১২ জন কাউন্সিলর। কাউন্সিলর সুনীল চৌধুরী জানান, প্রায় ১০ মাস বয়স এই বোর্ডের। এই সময়ের মধ্যে কোনও উন্নয়ন হয়নি। পুরপ্রধান উন্নয়নের ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করেন না বলেও অভিযোগ তাঁর। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দলকে সমস্ত কিছু জানানো হয়েছে। দল ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে বলেও দাবি করেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভায় যাঁরা কাজের জন্য আসছেন, তাঁদের প্রতি দুর্ব্যবহার করছেন পুরপ্রধান। বাড়িতে জলের আবেদন করতে চাইলে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। ভিখারিদের মারধর করছেন।’’ পুরসভায় দুর্নীতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের অভিযোগ, ‘‘চার হাজার টাকা দিয়ে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্বাক্ষর ছাড়া ৬ হাজার টাকায় পাশ হয়ে যাচ্ছে বাড়ির প্ল্যান। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কয়েকজন কর্মচারীও। পুরপ্রধানও তাঁদের পাশে থাকছেন।’’

১৪ ডিসেম্বরের সভায় ভাঙা কাপে যিনি আহত হয়েছিলেন, তিনি আসলে অসুস্থ হননি বলেও দাবি করেন তাঁরা। কাউন্সিলর কল্পনা বসু বলেন, ‘‘সম্প্রতি পুরসভার বৈঠকে যেটুকু সমস্যা হয়েছিল তা চেয়ারম্যান মিটিয়ে দিতে না পারতেন। অথচ তিনি তা না করে দলের কাউন্সিলর অনিল বসুর নামে থানায় অভিযোগ করলেন। চেয়ারম্যান কেন দলকে রাস্তায় টেনে নামালেন? এতে আমরা কষ্ট পেয়েছি।’’ পূর্ত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলার সন্দীপ বসুও একই মন্তব্য করেন।

পুরপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমি দলের অনুগত সৈনিক। দলবিরোধী কোনও কাজ কখনও করিনি। করবও না। ভবিষ্যতে দল যা বলবে, তা মেনে নেব।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কালনার বিষয়টি শুনেছি। কাউন্সিলরদের অভিযোগ থাকতে পারে। অভিযোগের সত্যতাও থাকতে পারে। তবে এ ভাবে খোলাখুলি বলা উচিত হয়নি। এটা দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের সামিল। রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna TMC Councilor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy