প্রতীকী চিত্র
খয়রাতি কমিয়ে নজর দিতে হবে আয়ে, বারবার জানিয়েছে অর্থ দফতর। কয়েক মাস আগে এ নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকও হয় পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদে। কিন্তু তার পরেই জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি ও ন’জন কর্মাধ্যক্ষের জন্য দামি ল্যাপটপ কেনা হয়েছে। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে জেলা পরিষদের অন্দরে। প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরাও।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জেলা ভাগের আগেও সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি ও কর্মাধ্যক্ষদের মধ্যে ল্যাপটপ বিলি করা হয়েছিল। জেলা ভাগের পরে সেই ল্যাপটপ ফেরত দেওয়ার জন্য কর্মাধ্যক্ষদের বারবার চিঠি পাঠায় জেলা পরিষদের সাধারণ বিভাগ। তার মধ্যে এ বার পুজোর আগে অর্থ সংক্রান্ত বৈঠকে ঠিক হয়, এ বছরও সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি ও ন’জন কর্মাধ্যক্ষকে ল্যাপটপ দেওয়া হবে। ওই বৈঠকে থাকা এক সদস্য দাবি করেন, “ল্যাপটপ কেন মেলেনি, এ নিয়ে পরপর দু’তিনটি বৈঠকে জেলা পরিষদের আধিকারিকদের কাছে রীতিমতো কৈফিয়ত চাওয়া হত। যে ল্যাপটপ বাছাই করা হয়েছিল, খোলা বাজারে এক-একটির দাম প্রায় ৭৬ হাজার টাকা!”
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের ল্যাপটপ সরকারের ই-মার্কেটিং পরিষেবা থেকে কেনার কথা ভাবা হয়। সেই মতো ১১টি ল্যাপটপ কেনা হয়। এক-একটি ল্যাপটপের জন্য জেলা পরিষদের খরচ হয়ছে প্রায় ৪৭ হাজার টাকা। ২৮ জানুয়ারি থেকে সেগুলি বিলি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্ত ল্যাপটপ নেবেন না বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েছেন। তবে বাকি কর্মাধ্যক্ষদের কেউ-কেউ ল্যাপটপ নেওয়ার মধ্যে ‘অন্যায়’ দেখছেন না। তবে দাম শুনে তাঁদেরও চোখ কপালে উঠছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কাজের প্রয়োজনে ল্যাপটপ দরকার রয়েছে ঠিকই, কিন্তু প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকায় তা কেনার যুক্তি নেই।’’
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ সভার বৈঠকে কিছু সদস্য ল্যাপটপ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এক মহিলা সদস্যের অভিযোগ, “গত বারের বোর্ডের ল্যাপটপগুলির কোনও হিসেব নেই। এ বার যাঁরা ল্যাপটপ পাচ্ছেন, তাঁদের ক’জন ব্যবহার করতে জানেন, সে প্রশ্নও রয়েছে।’’ বর্ধমান ১ ব্লকের এক জেলা পরিষদ সদস্যের কথায়, “গত বার তো কোনও কর্মাধ্যক্ষকে ল্যাপটপ নিয়ে অফিসে আসতে দেখিনি। কী কাজে লেগেছে কেউ জানেন না।’’ আর এক সদস্যের অভিযোগ, ‘‘অর্থ দফতর বারবার জানাচ্ছে, তহবিল কমছে। সেখানে বেশিরভাগ কর্মাধ্যক্ষ ল্যাপটপ আদায় করলেন!’’ সদস্যদের একাংশের আবার প্রশ্ন, কর্মাধ্যক্ষেরা ল্যাপটপ পেলে তাঁরা কেন ‘স্মার্ট ফোন’ পাবেন না?
প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকারের প্রতিক্রিয়া, “জেলা পরিষদের রাস্তাঘাট ভেঙে পড়ছে। সেখানে কর্তারা গরিবের টাকায় বিলাসিতা করছেন!’’ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, ‘‘ওঁরা কখনও কাটমানি নিচ্ছেন, কখনও ল্যাপটপ নিচ্ছেন। টাকা কী ভাবে নয়ছয় করতে হয়, তৃণমূল ভাল রপ্ত করেছে।’’
জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়া শুধু বলেন, ‘‘অর্থ বিষয়ক ও সাধারণ সভায় সবাই মিলে ল্যাপটপ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আগের বোর্ডেও ল্যাপটপ বিলি করা হয়েছিল। বিভিন্ন দফতরের কাজের স্বার্থেই তা করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy