কেন্দাগ্রামের মুচিপাড়ায় গর্ত। নিজস্ব চিত্র
নামল ধস। আর তার জেরে প্রায় ২০ ফুট গভীর একটি গর্ত তৈরি হয়েছে। সোমবার সকালে নিউ কেন্দা কোলিয়ারি এলাকার কেন্দা গ্রামের মুচিপাড়ার ঘটনা। এর জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তাঁরা জানান, এ দিন দেখা যায়, বসতি এলাকা থেকে ৩০ ফুট দূরেই তৈরি হয়েছে গর্তটি। ইসিএল জানিয়েছে, গর্তটি ভরাটের কাজ চলছে। কিন্তু এই ঘটনা ফের গ্রামের পুনর্বাসনের প্রশ্নটিওউস্কে দিয়েছে।
এ দিনের ঘটনার পরে কেন্দা গ্রামরক্ষা কমিটির সম্পাদক বিজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামে বার বার ধস নামছে। এর ফলে, জীবন-জীবিকা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। আমাদের পুনর্বাসন কবে দেওয়া হবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।” একই কথা বলছেন স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য, টুম্পা বাউড়িরাও। তাঁদের আশঙ্কা, “এ ভাবে চলতে থাকলে, কোনও দিন বাড়ি চাপা পড়েই মরে যাব।”
কিন্তু কেন উঠছে পুনর্বাসনের প্রসঙ্গ? ২০০৫-এ কেন্দা গ্রামকে ধস-প্রবণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পুনর্বাসনের দেওয়ার যোগ্য বলে চিহ্নিত করে ডিজিএমএস। ২০০৯-এ পুনর্বাসন প্রকল্পের ‘নোডাল এজেন্ট’ আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) কেন্দা গ্রামের ২,০৬৪টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য সচিত্র পরিচয়পত্র দেয়। কিন্তু এখনও পুনর্বাসন মেলেনি বলে অভিযোগ।
অথচ, এই গ্রামেই কখনও ধসের জেরে গোয়ালঘর-সহ গরুর ভূগর্ভে তলিয়ে যাওয়া, স্থানীয় মন্দিরের সামনে ফাটল, মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া-আগুন বেরোনোর মতো ঘটনা ঘটেছেবার বার। কেন এমন ঘটনা ঘটে? নিউ কেন্দা কোলিয়ারির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান, কেন্দা গ্রাম লাগোয়া এলাকাও ধসপ্রবণ। কয়লা শিল্পের রাষ্ট্রায়ত্তকরণের আগে বেসরকারি কয়লা সংস্থা খনিগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন করেছে। নানা কারণে মাটির নীচে বিস্তীর্ণ এলাকায় আগুন জ্বলছে। তাই বার বার ধস নামছে। এই এলাকা বসবাসের উপযুক্ত নয়।
এ দিকে, এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২২,৬৬৬টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় সাড়ে দশ হাজার বাড়ি তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এর পরে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কেন্দ্র সরকার দিচ্ছে না। তার জেরে নতুন করে আবাসন তৈরি করা যাচ্ছে না। যদিও, ইলিএলের এক আধিকারিক জানান, দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেতে গেলে বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী আবাসন তৈরির সমীক্ষা-রিপোর্ট জমা দিতে হয়। তা না দেওয়াতেই কয়লা মন্ত্রক টাকা দিতে পারছে না। এমন চাপান-উতোরের মধ্যে তাঁদের জীবন-জীবিকা কত দিন আর নিরাপদ থাকবে, তা নিয়েই আশঙ্কায় বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy