অবৈধ নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র।
জমি দখল রুখতে নির্দেশিকা জারি করেছে সরকার। কিন্তু সেই সব নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাঁধ লাগোয়া এলাকার দু’পাড় দখল করে দিব্যি গড়ে উঠেছে বসতি। এই পরিস্থিতিতে বর্ধমান শহর লাগোয়া দামোদর বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক ধরেই চলছে জমির দখল। প্রথম দিকে অস্থায়ী নির্মাণ গড়ে তোলা হয়। গত বিধানসভা ভোটের পরে অনেকেই পাকা বাড়ি তুলেছেন বলে খবর। শুধু তাই নয়, গজিয়ে উঠেছে ‘বটম পাড়া’র মতো বেশ কয়েকটি পাড়াও। পাড়াগুলিতে বিদ্যুৎ থেকে পানীয় জল, কিছুরই অভাব নেই। অনেকে আবার টিউবওয়েলও বসিয়েছেন।
কী ভাবে বসতি গড়ে উঠল এই এলাকায়? মনোজ কীর্তনীয়া, রমেশ বাহারেরা অকপটেই জানান, গত ছ’মাস ধরে জমি দখল করে এখানে রয়েছেন। প্রীতিলতা মণ্ডল, শিখা মণ্ডলেরা আবার পরিষ্কার বলেন, ‘‘বারাসাত ও নৈহাটি থেকে এখানে এসে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে জায়গা কিনে বাড়ি করেছি। রেশন বা ভোটার কার্ড নেই।”
এই পরিস্থিতিতে শিয়রে সঙ্কট দেখছে স্থানীয় বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েত ও বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতি। এই দুই প্রশাসনিক দফতরের কর্তারাই সেচ দফতরে চিঠি লিখে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ ও জমি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের কর্তাদের শঙ্কা, এই নির্মাণগুলি আখেরে দামোদর নদের উপরে থাকা বাঁধটিরই ক্ষতি করবে। বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী দাস রজক বলেন, “আমি নিজে অতিরিক্ত জেলাশাসককে (সেচ) বিষয়টি জানিয়েছি। জমি দখল হয়ে গেলে বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা হবে।”
এমনটা চলতে থাকলে আখেরে শহরবাসীই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে প্রশাসনের কর্তাদের শঙ্কা। বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের শঙ্কা, ‘‘এখন দামোদরে জল রয়েছে কানায় কানায়। এমন অবস্থায় নিম্নচাপের কারণে ফের যদি বৃষ্টি হলে তা বাঁধে ধাক্কা মারবে। আমি জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরকে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।’’
বছর খানেক ধরে ‘ধীরে ধীরে’ এমন নির্মাণ চললেও হঠাৎ এখনই কেন সকলের মাথাব্যথা? পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা মনে করছেন, সম্প্রতি রাজ্য কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের সচিব মনোজ অগ্রবাল এক নির্দেশিকায় জেলা প্রশাসনকে সরকারি জমি পুনরুদ্ধার ও ফাঁকা জমির দখল নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এক সময়, রাস্তা তৈরি বা বাঁধ দেওয়ার জন্য অনেক জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। তার অনেকটাই এখনও ফাঁকা পড়ে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বাঁধের দু’ধার পাঁচিল দিয়ে ঘেরা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। আর তাই দখলদার উচ্ছেদের জন্য পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। সেচ দফতরের ইদিলপুরের মহকুমাশাসক সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একের পর এক বেআইনি বাড়ি তৈরি করে জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। শ্রীরামপুরের কাছে পাকা ভবন করে দুগ্ধ সমবায় কেন্দ্রও গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশকে জানানো হয়েছে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (সেচ) রত্নেশ্বর রায় সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকারকে এই বিষয়টি নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy