বিজেপির ‘অক্ষত চাল’ পুজো। কাটোয়ায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় এবং মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল অক্সিজেন জুগিয়েছে কাটোয়ার ঝিমিয়ে পড়া বিজেপি সংগঠনে। ফল ঘোষণার পরে, দু’দিন ধরে কাটোয়ার ইঁদারাপাড় থেকে শুরু করে অনেক গ্রামীণ এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরা গেরুয়া আবির মেখে বিজয় মিছিল করেছেন। পথচারীদের লাড্ডুও বিলি করেছেন। এ বার রামমন্দির উদ্বোধনকে উপলক্ষ করে বিজেপি কর্মীদের ময়দানে নামানোর পরিকল্পনা করেছে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যেই সেই কর্মসূচির রূপরেখাও চূড়ান্ত বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের আগে অযোধ্যা থেকে আসা ‘অক্ষত চাল’ ও রামের ছবি নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এই কাজ করবেন সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গ দেবেন দলীয় কর্মীরা। তখন তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা থাকবে না। তাঁরা গ্রাম ও শহরের প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে হলুদ মেশানো ‘অক্ষত চাল’ ও রামের ছবি দেবেন। ‘করজোড়ে’ অযোধ্যায় রামমন্দির দর্শনের আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রতি দলে থাকবেন তিন থেকে চার জন। মূল লক্ষ্য, লোকসভা ভোটের আগে জনসংযোগে শান দেওয়া। তৃণমূলের অভিযোগ, ধর্মীয় ভাবাবেগে সুড়সুড়ি দেওয়ার জন্যই এই কর্মসূচি। ধর্মীয় বিভাজনের লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে সিপিএম-কংগ্রেসও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সঙ্ঘ পরিবারের কাটোয়ার এক নেতা বলেন, “রামলালার মন্দির উদ্বোধন হতে চলেছে। আমরা চাই, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে প্রত্যেক মানুষ রামমন্দির দর্শন করুন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অযোধ্যা থেকে আসা অক্ষত চাল ও রামচন্দ্রের ছবি দিয়ে সেই আবেদন জানাব।”
বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমরাও চাই দেশের প্রতিটি মানুষ রামমন্দির দর্শন করুন। আমাদের কর্মীরা রামভক্তদের কাজে সাহায্য করতেই পারেন। ভগবান রাম সকলের। একমাত্র তোষণকারীরাই রামমন্দিরের বিরোধিতা করেন।”
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন আগে অযোধ্যা থেকে পুজো করা কলসি ভর্তি অক্ষত চাল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলায়ও এসেছে। রবিবার অক্ষত চাল পূর্বস্থলীর জামালপুরে বাবা বুড়োরাজের মন্দিরে পুজো হয়। তার পরে সেই চাল দলের কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচি নিয়ে বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। পয়লা জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার বুথ স্তরে তা পালিত হবে।
এই কর্মসূচি সম্পর্কে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “ধর্ম নিয়ে মানুষের ভাবাবেগে ইন্ধন দেওয়ার চেষ্টা করাই বিজেপির একমাত্র কর্মসূচি। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এ সব কাজ ওরা বেশি করে করবে। কিন্তু, মানুষ ওদের চালাকি বুঝতে পারেন। তাই এ সবকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।”
কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা বিজেপির অভ্যাস। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হচ্ছে।’’ কাটোয়া মহকুমা কংগ্রেস সভাপতি জগদীশ দত্তের প্রশ্ন, ‘‘ভক্তির টানে রামমন্দির দর্শনে যাবেন মানুষ। নিমন্ত্রণের প্রয়োজন কেন পড়েছে বিজেপির? আসলে ওরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতেই ভালবাসে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy