কঙ্কালেশ্বরী কালীমূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।
কঙ্কালসার চেহারা। আট হাত। মাথার উপরে রয়েছে হাতি। পায়ের নীচে শুয়ে রয়েছেন মহাদেব। বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরে কঙ্কালেশ্বরী কালীর রূপ এমনই। চামুণ্ডা বিগ্রহের উচ্চতা প্রায় ১.৮ মিটার। অনেকে একে বৌদ্ধ চামুণ্ডার রূপ বলেন। আবার অনেকের মতে এটি বৌদ্ধ আমলে তৈরি। পাথরের উপরে কঙ্কালের রূপ ফুটে উঠেছে। বন্যার জল সরতে নদীগর্ভ থেকে মিলেছিল এই মূর্তি।
কালো ব্যাসল্ট পাথরে তৈরি করা হয়েছে বিগ্রহ। উপরের ডান হাতে রয়েছে ত্রিশূল। বিগ্রেহ পায়ের দু’পাশে রয়েছে দু’টি শিয়াল। প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো এই টেরাকোটা মন্দিরের ন’টি চূড়া রয়েছে। পুরাতাত্ত্বিকদের মতে, কালীর এই বিগ্রহ পাল যুগের। দু’হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন। আবার কারও মতে, মূর্তিটি জৈন আমলের। কেউ কেউ মূর্তিতে বৌদ্ধ তন্ত্রের প্রভাব লক্ষ্য করেন। কেউ আবার বলেন, কঙ্কালসার মূর্তিটি প্রাক-আর্য সময়কালের যক্ষিণী মূর্তি।
কথিত রয়েছে, ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বন্যা হয়েছিল বাংলায়। দামোদর গ্রাস করেছিল গোটা এলাকা। বন্যার জল নামার পর দামোদরের গর্ভ থেকেই উদ্ধার হয় কষ্ঠিপাথরের এই দেবীমূর্তি। পরে তাকে পুজো করতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। তখন থেকেই দেবীর আরাধনা হয়ে আসছে। বর্ধমান পুরসভা ও বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার তরফে কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির এবং তার সংলগ্ন এলাকাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে পার্ক। বসানো হয়েছে বাতি। রাস্তাঘাটের সংস্কার হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম এই কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির। প্রায় সারা বছরই এখানে ভক্ত সমাগম হয়ে থাকে। কালীপুজোর দিন তার অন্যথা হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy