প্রতীকী ছবি।
ছেলেধরা গুজবের জেরে এ বার এক সেনা জওয়ানকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে। বুধবার রাতে কোকআভেন থানার সগড়ভাঙার ভৈরবতলা এলাকায় পুলিশ গিয়ে ওই জওয়ানকে উদ্ধার করে। এই থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েক দিন ধরে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর বা হেনস্থার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায়, গুজব না ছড়ানোর জন্য সচেতনতা প্রচার করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়ানোর পরে সগড়ভাঙা এলাকায় রাতপাহারার ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। বুধবার রাতে ভৈরবতলায় এক অপরিচিত যুবককে দেখে পথ আটকান পাহারায় থাকা কয়েকজন। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি যে ভাষায় কথা বলেন, তা বুঝতে পারেননি ওই বাসিন্দারা। অভিযোগ, এর পরেই যুবককে হেনস্থা শুরু করেন কেউ-কেউ। তিনি তখন সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্র দেখান। তা সত্ত্বেও রেহাই পাননি। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে ওই বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ। পুলিশ শেষে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে পুলিশ ওই জওয়ানের পরিচয় প্রকাশ করতে চায়নি।
১১ সেপ্টেম্বর সালানপুরে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক জনের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এর পরে জামুড়িয়া, আসানসোলের ডামরায় ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। দুর্গাপুর মহকুমায় এমন ঘটনা প্রথম ঘটে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে অণ্ডালের ছোড়া পঞ্চায়েতের শঙ্করপুর গ্রামে। এক যুবককে আটকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। এর দিন দুয়েক পরেই ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা এলাকার গোগলা পঞ্চায়েতের বনগ্রাম নিউপিট এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে দুই অপরিচিত মহিলাকে আটকে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। পুলিশ জানতে পারে, মহিলাদের বাড়ি পাণ্ডবেশ্বরের ডালুরবাঁধে। এ দিন তাঁরা ভিক্ষা করতে এসেছিলেন ওই এলাকায়।
এর পরে একের পর এক ছেলেধরা সন্দেহে গোলমালের ঘটনা ঘটেছে দুর্গাপুরের কোকআভেন থানা এলাকায়। ১৬ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর রাত পর্যন্ত এমন ছ’টি ঘটনা ঘটে। ভবঘুরে, সন্ন্যাসীর পোশাক পরা ব্যক্তি বা সেনা জওয়ান— সন্দেহ থেকে রেহাই পাননি কেউ। আক্রান্তকে উদ্ধারে গিয়ে পুলিশও হামলার মুখে পড়েছে একটি ঘটনায়। ছ’জনকে গ্রেফতারও করা হয় সেক্ষেত্রে।
তবে এখনও পর্যন্ত কোনও ঘটনাতেই বাসিন্দাদের হাতে আটক হওয়া কারও বিরুদ্ধে ছেলেধরা সন্দেহের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ জানান, অযথা গুজবে কান না দিয়ে পুলিশকে খবর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এলাকায়-এলাকায় প্রচার করে। গণপিটুনির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy