প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের পার্টি অফিস বলে এলাকায় পরিচিত ‘বাংলার আবাস যোজনা’র ঘরের দখল উপভোক্তাকে দেওয়ার নির্দেশ দিল পূর্ব বধর্মানের জামালপুর ব্লক প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জামালপুর থানাকে ওই চিঠি পাঠান বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার। তিনি বলেন, “উপভোক্তাকে ঘর তৈরি করতে টাকা দেয় সরকার। সেই টাকায় ঘর তৈরি হয়েছে কি না, দেখার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু সেই ঘর জবরদখল হয়েছে কি না সেটা পুলিশ দেখবে। সে জন্যই ওই উপভোক্তার আবেদনের ভিত্তিতে পুলিশকে ঘরের দখল ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জামালপুরের কাঠুড়িয়াপাড়ায় নীল-সাদা রঙের ঘরটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি, বাতানুকূল যন্ত্র, এলইডি টিভিতে সাজানো। ভোটের আগে নেতাদের নিয়মিত বৈঠক করতে দেখা যেত ওই ঘরে। বুধবার ওই ঘরের ‘দখল’ নিয়ে দলীয় পতাকা তুলে দেয় বিজেপি। উপভোক্তা শঙ্কর মাঝিকে ঘর ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য শুরু হয় বিক্ষোভ, পঞ্চায়েত ঘেরাও। বিকেলের দিকে পঞ্চায়েত কর্মীরা এসে ঘরের দেওয়ালে প্রকল্পের আইডি নম্বর, উপভোক্তার নাম লিখে দেন।
এ দিন ওই উপভোক্তাও বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন। ঘরটি ফেরত পাওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন। চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, ‘আমার নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। কিন্তু ওই ঘরটি স্থানীয় তৃণমূল নেতা রামরঞ্জন সাঁতরা ওরফে বুটে গায়ের জোরে দখল করে বিলাসবহুল পার্টি অফিস তৈরি করেছে’। বুধবার দিনই তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। তিনি কোনও অ্যাকাউন্ট খোলারও চেষ্টাও করেননি। বিজেপিরও অভিযোগ ছিল, তাঁর নাম ভাঁড়িয়ে তৃণমূলের লোকজনই টাকা তুলে নিয়েছে। তবে ‘জিও ট্যাগিং’ ও ‘আবাস’ সফট্ওয়্যারের জন্যে শঙ্করবাবুকে ওই ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন ওই সরকারি প্রকল্পের জামালপুর ২ পঞ্চায়েতের ‘ফেসিলিটেটর’ প্রশান্ত ধারা। তিনি বিডিওকে রিপোর্ট করেছেন, পার্টি অফিস বলে পরিচিত ঘরটির সামনে শঙ্করবাবুকে নিয়ে ভিত খোঁড়ার সময় থেকে ঘর সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিন বার ছবি তোলা হয়েছে। ওই ঘরটি তাঁর বলেই সরকারি ‘পোর্টালে’ উল্লেখ রয়েছে। বিডিও বলেন, “পঞ্চায়েত থেকে ঘরের উপর বাংলার আবাস যোজনা লেখা হয়েছে, তখন সেটি নিশ্চিত ভাবে সরকারি প্রকল্পে তৈরি।’’
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রামরঞ্জন সাঁতরার দাবি, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে এ কাজ করেছি না দলের নির্দেশে করেছি, তা দল বলবে। আমি কিছু বলব না।’’ তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ পাল গত কাল ওই ঘরটি পার্টি অফিস বলে দাবি করলেও এ দিন বলেন, “ঠিক কী হয়েছে, আমরা দলীয় ভাবে তদন্ত করে দেখছি।’’ বিজেপির যুব নেতা অজয় ডোকালের দাবি, “প্রশাসন ঘর ফেরানোর জন্যে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এখন দেখার, তালা ভেঙে ঘরে কবে ঢুকতে পারেন উপভোক্তা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy