বড়দিনে নৌকাবিহার। মাইথনে। অভিযোগ, বহু পর্যটককেই লাইফ জ্যাকেট পরতে দেখা যায়নি। ছবি: পাপন চৌধুরী
বড়দিনের ছুটির আবহে জেলার বিভিন্ন পিকনিক স্পট, পর্যটন ক্ষেত্রে উপচে পড়ল জনতার ভিড়। সর্বত্র পুলিশি ব্যবস্থা নজরে পড়েছে। কিছু জায়গায় অনিয়মের চিত্র সামনে এসেছে বলে অভিযোগ। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঘটেনি বলেই পুলিশের দাবি।
বরাকর নদীর সালানপুরের সিদাবাড়ি, মাইথন, রানিগঞ্জের মথুরাচণ্ডী ঘাট, অন্ডালের শ্রীরামপুর, কুঠিডাঙা, দুর্গাপুর ব্যারাজ, অজয়ের পাড়ে পাণ্ডবেশ্বরের পাণ্ডুমুণির মন্দির থেকে দুর্গাপুরের মায়াবাজার সবর্ত্রই পিকনিকের আসরে প্রচুর জনসমাগম হয়েছিল। সিদাবাড়িতে সেফটি জ্যাকেট ছাড়া নৌকাবিহার করতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। পিকনিক করতে আসা পার্থ আচার্য বলেন, “প্রতিটি নৌকায় ছ’জনকে চাপানো হচ্ছে। সব যাত্রীকে সেফটি জ্যাকেট দেওয়া হচ্ছে না। আবার অনেকে তা নোংরা বলে অনেকে পরেননি।” সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন মাঝিদের একাংশ। বিডিও (সালানপুর) অদিতি বসু অবশ্য বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। নৌকার মাঝিদের বলা হয়েছে যতগুলি সেফটি জ্যাকেট থাকবে, তত জন যাত্রীকেই নৌকায় চাপাতে হবে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।”
এ দিকে, পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যার বিষয়ও সামনে এসেছে। শ্রীরামপুর কুঠিডাঙার বিকাশ মিত্র, পাণ্ডুমুণি মন্দির লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা মহেশ মণ্ডলেরা জানান, অনেকেই সঙ্গে করে জল আনতেবাধ্য হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ব্যারাজের দুর্গাপুরের দিকের অংশে পিকনিক বন্ধ। কিন্তু বাঁকুড়ার দিকে অনেককেই নদের চরে পিকনিক করতে দেখা গিয়েছে। তবে নৌকাবিহারের সময়ে অনেকেই লাইফ জ্যাকেট পরেননি বলে অভিযোগ।
পাশাপাশি, ভিড় দেখা গিয়েছে দুর্গাপুরের হুচুকডাঙা, দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে, বিভিন্ন গির্জায়, পার্কেও। এ দিকে, কাঁকসার দেউলে গত দু’বছরের তুলনায় এ বার ভিড় অনেকটাই বেশি হয়েছিল বলে দাবি। থার্মোকল ব্যবহার, ডিজে বাজানো নিষিদ্ধ এখানে। মুর্শিদাবাদের তুফান মণ্ডল, সীমা দত্তেরা তবে বলেন, “এখানকার পরিবেশ খুব ভাল। পিকনিকের পাশাপাশি দেউল, আর তার পাশে পার্ক ঘুরে নিজের মতো করে সময় কাটিয়েছি।” এ বছর জঙ্গলের ভিতরে পিকনিকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন দফতর। সে মতো বনকর্মীরা নজরদারি চালিয়েছেন। দেউলের ওই পার্কের তরফে সোমনাথ হাজরা জানান, মনোরঞ্জনের জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা করা হয়।
ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) সুমন জয়সওয়াল বলেন, “কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সব জায়গাতেই পুলিশের নজরদারি ছিল।” পাশাপাশি, বড়দিনেই পাণ্ডবেশ্বর থানা কয়েকটি খোয়া যাওয়া মোবাইল সংশ্লিষ্ট মালিকদের ফিরিয়ে দিয়েছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাঁকোলা রেলগেট থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রচারে ম্যারাথন দৌড়ের আয়োজন করে। রানিগঞ্জের তিরাটের একটি আশ্রমে দিনটি পালিত হয়। সঙ্গে পালিত হয়েছে তুলসী জয়ন্তীও। কল্যাণেশ্বরী মাইথন থার্ডডাইক পিকনিক স্পটে কুলটি ট্র্যাফিক গার্ড ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ বিষয়টিকে সামনে রেখে সচেতনতা প্রচার চলে।
সর্বত্রই কোভিড-বিধি উপেক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ। রাজ্যের কোভিড মনিটরিং কমিটির পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, “কোভিডের নতুন উপরূপের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এ সময় নাগরিক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর শনিবারই উৎসবের দিনগুলিতে জেলাবাসীকে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য সচেতনতা প্রচার করেছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “প্রায় ৭৮ শতাংশ বাসিন্দা বুস্টার ডোজ় নেননি। তাঁদের দ্রুত বুস্টার ডোজ়নিতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy