ফাইল চিত্র।
এলাকায় স্বাস্থ্য-বিধি পালনের দিকে নজর থেকে লকডাউনে বাজার-দোকান নিয়ন্ত্রণ, করোনা-কালে কাজ বেড়েছে পুলিশের। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের ৭৮ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাতে চিন্তা বাড়ছে জেলা পুলিশের কর্তাদের।
খণ্ডঘোষের ১৮ জন পুলিশকর্মীর করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছে। দ্বিতীয় বার সংক্রমিত হওয়ায় ওসি প্রসেনজিৎ দত্তকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকিদের কেউ কোভিড হাসপাতাল, কেউ ‘হোম আইসোলেশন’-এ রয়েছেন। তাঁদের সংস্পর্শে আসা অন্য পুলিশকর্মীদের নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। তবে শুক্রবার ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট’-এ ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্ট আসা দুই পুলিশকর্মীর ‘আরটি-পিসিআর’ পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট এসেছে রবিবার। সিএমওএইচ প্রণব রায় অবশ্য বলেন, ‘‘অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ‘পজ়িটিভ’ মানে সেটা নেগেটিভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ‘আরটি-পিসিআর’ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহে কোনও সমস্যা হয়েছিল বলে মনে করছি। বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যা থেকেই খণ্ডঘোষ থানা ভবনে তালা পড়ে গিয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ১৫০ মিটার দূরে একটি অনুষ্ঠানবাড়ি ভাড়া নিয়ে থানার কাজ চালানো হচ্ছে। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় ৬৮ বছরের পুরনো থানায় এই প্রথম ‘তালা’ পড়তে দেখলেন। বেশ কয়েকজনের দাবি, ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েকবার থানায় হামলা হয়েছিল। কিন্তু দরজায় তালা পড়েনি। বর্ধমানের ইতিহাস গবেষক সর্বজিৎ যশ বলেন, ‘‘ওই এলাকা কখনও হুগলি, কখনও মেদিনীপুরে ছিল। ১৮৮৬ সালে হুগলির জাহানাবাদ (অধুনা আরামবাগ) থানার ভিতরে খণ্ডঘোষ ফাঁড়ি হয়েছিল। বর্ধমানে অন্তর্ভুক্তির পরে ১৯৫২ সালে থানায় উন্নীত হয়।’’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই পরিস্থিততে গত এক-দেড় বছর খণ্ডঘোষ থানায় ছিলেন, এমন পুলিশকর্মী ও অফিসারদের দিয়ে আপাতত কাজ চালানোর কথা ভাবা হয়েছে। সেইমতো ন’জন আধিকারিক ও ১২ জন পুলিশকর্মীকে বিভিন্ন থানা থেকে খণ্ডঘোষে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও হোমগার্ড, এনভিএফ কর্মীরা রয়েছেন। জেলার পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিষেবা পেতে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সে ভাবে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে থানা ভবন জীবাণুমুক্ত করা যাবে।’’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানে করোনা আক্রান্ত পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডেপুটি পুলিশ সুপার, ওসি পদমর্যাদার আধিকারিকেরা আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি বুঝে পুলিশ লাইনে দু’টি নিভৃতবাস কেন্দ্র গড়া হয়েছে। সেখানে একশো জন থাকতে পারবেন। মৃদু সংক্রমণ রয়েছে, এমন রোগীদের জন্য বর্ধমান ও কাটোয়ায় যথাক্রমে ৪০ জন ও ২০ জনের ‘সেফ হাউস’ তৈরি করা হয়েছে। কালনাতেও ২০ শয্যার ‘সেফ হাউস’ গড়ছে পুলিশ। এ ছাড়া সুরক্ষা-বিধি মেনে থানার প্রতিটি গাড়ি, বিচারাধীন বন্দিদের যাতায়াতের গাড়ি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ গিয়েছে প্রতিটি থানায়। পুলিশ সুপার বলেন, “বিধি মেনে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে নিভৃতবাস কেন্দ্র, ‘সেফ হাউস’ বাড়ানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy