Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Illegal sand mining

illegal sand mining: কোদাল, বেলচা হাতে বালি কাটার অভিযোগ

জেলায় গত ১ জুলাই থেকে চার মাস নদীগর্ভের বালি তোলার কাজ নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন।

এ ভাবেই চলে বালি ‘পাচার’।

এ ভাবেই চলে বালি ‘পাচার’। ছবি: পাপন চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২১ ০৫:৪৪
Share: Save:

আগে ছিল মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে বালি তোলা। এখন বালি কাটতে ভরসা এলাকাবাসী, আর তাঁদের কোদাল-বেলচা! আগে, ‘অবৈধ’ ভাবে তোলা বালি সরাসরি ট্রাক, ডাম্পারে করে ‘পাচার’ করা হত। এখন, তা প্রথমে লাগোয়া জঙ্গলে রেখে, পরে রাতের দিকে ডাম্পার, অটোয় করে ভিন্-রাজ্যে পাচার করা হচ্ছে। বালির বেআইনি কারবারে এমনই ‘ধরন’ বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে অভিযোগ পশ্চিম বর্ধমানের শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে এলাকাবাসী, সকলেরই।

ঘটনা হল, জেলায় গত ১ জুলাই থেকে চার মাস নদীগর্ভের বালি তোলার কাজ নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সন্দীপ হাঁসদা বলেন, ‘‘বর্ষায় নদীর গতিপথ স্বাভাবিক রাখা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’’

কিন্তু বিরোধী ও স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ, এর পরেও, কুলটি, ডিসেরগড়, সালানপুর, বার্নপুর-সহ নানা জায়গায় গেলেই দেখা যাবে, দামোদর ও অজয়ের পাড় কেটে রাস্তা বানিয়ে বালি চুরি চলে। যেমন, কুলটির আলডি, বার্নপুরের শ্যামডিহি ও ঢাকেশ্বরীতে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় মানুষজনকে নদীতে নামিয়ে কোদাল-বেলচা দিয়ে বালি তোলানো হচ্ছে। তা বস্তাবন্দি করা হচ্ছে এবং তার পরে, সাইকেলে করে তা রাখা হচ্ছে লাগোয়া ঝোপ-জঙ্গল ঘেরা জায়গায়। পরে, সে বালি বস্তাবন্দি করে ট্রাক্টর ও অটোতে চাপিয়ে রাতে ‘পাচার’ করা হচ্ছে ঝাড়খণ্ডে।

কী ভাবে চলে এই ‘পাচার’? স্থানীয় সূত্রের দাবি, কল্যাণেশ্বরী, রূপনারায়ণপুর, বরাকর, ডুবুরডিহি-সহ সীমানা এলাকাগুলি দিয়ে মূলত জঙ্গলের রাস্তা বেয়ে চলে এই পাচার। পাশাপাশি, মূল রাস্তা দিয়েও এই পাচার চলছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। যদিও পুলিশ তা স্বীকার করেনি। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘বালি পাচার নিয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সীমানা এলাকাতেও কড়া নজরদারি রয়েছে। তার পরেও যখন অভিযোগ উঠছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’

স্থানীয় সূত্রের দাবি, অবৈধ বালি পাচারের এক-একটি জায়গায় ২০০ টাকা রোজে দু’-আড়াইশো মানুষ কাজ করেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় এত মানুষ এক সঙ্গে ‘বেআইনি কারবারে’ কী ভাবে কাজ করছেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘সরকার সম্প্রতি বালিঘাটের দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে নতুন নীতির কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু প্রশাসন এবং রাজ্যের শাসক দলের সদিচ্ছা না থাকলে, বালির বেআইনি কারবার বন্ধ হবে না। জেলার নানা প্রান্তে তাই বালির কারবারে একেবারেই লাগাম পড়েনি।’’

বিজেপির আসানসোল জেলা আহ্বায়ক শিবরাম বর্মনের দাবি, ‘‘চুরির কাজে যুক্ত আছেন তৃণমূলের মদতপ্রাপ্তেরা। তাই নীতি বদলের আগে, তৃণমূলের উচিত, তাঁদের নেতা-কর্মীদের দিকে নজর দেওয়া।’’ তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বিষয়টির সঙ্গে দলের যোগাযোগ বা প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবের কথা মানেননি। তবে তাঁর সংযোজন: ‘‘বিস্তীর্ণ এলাকায় অবৈধ বালি পাচার চলছে, সে খবর স্থানীয় সূত্রে পাওয়া যাচ্ছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক সন্দীপবাবুও বলেন, ‘‘আমরাও কিছু জায়গা থেকে অভিযোগ পেয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএলএলআরও-দের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য বলা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal sand mining
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy