এ ভাবেই তোলা হচ্ছে বালি। বর্ধমান সেচখালে। নিজস্ব চিত্র।
প্রকাশ্যে দিনভর বেআইনি ভাবে বালি চুরি হচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারাজের বর্ধমান সেচখাল থেকে। শাসক দল তৃণমূলের মদত রয়েছে বলে পুলিশ-প্রশাসন ও সেচ দফতর নিষ্ক্রিয়, এমন নানা অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ ও সেচ দফতর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৫-এ দামোদরে ডিভিসি ব্যারাজ গড়ে ওঠে। ব্যারাজের বাঁ দিক থেকে বেরিয়ে যায় বর্ধমান সেচখাল। ১৯৫৮-য় এটি চালু হয়। প্রথমে ব্যারাজ থেকে জল সেচখালের শুরুতে থাকা জলাধারে জমা হয়। এর পর লকগেটের মাধ্যমে সেই জল সেচের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী দুই বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়ার বিস্তীর্ণ অংশে সরবরাহ করা হয়। শুরুর দিকে খরিফ ও রবি চাষের সেচের জন্য চালু হয়েছিল। পরে বোরো চাষের জন্যও জল সরবরাহ শুরু হয়।
সেচখালের জল কমে গেলে বালির স্তর জেগে ওঠে। এখন সেই পরিস্থিতি চলছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, এলাকার বেকারদের বালি তোলার কাজে লাগানো হচ্ছে। ক্যানালের মাঝ থেকে বালি তুলে বস্তায় ভরে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের মহানন্দ কলোনিতে গিয়ে মজুত করা হচ্ছে। এর পর সেখান থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এ ভাবে ‘অপরিকল্পিত’ ভাবে ক্যানালের মাঝ থেকে বালি তুলে নেওয়ায় ভবিষ্যতে প্রবাহে সমস্যা হতে পারে, আশঙ্কা করছেন স্থানীয়দের কেউ কেউ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা বলেন, “দিনভর মাথায় করে বস্তা বস্তা বালি নিয়ে যাচ্ছে মজুরের দল। পিছনে নিশ্চয়ই প্রভাবশালী কেউ আছে। তা না হলে থানা, সেচ দফতর কেউ কিছুই করছে না কেন?”
বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “শাসক দল সঙ্গে আছে বলেই সেচ দফতর, পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে যতই নির্দেশ দিন, পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না।” ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “সরকার ও পুলিশ চাইছে বেআইনি বালির কারবার চলুক। তা না হলে এমন হতে পারে না।” যদিও দুর্গাপুর ৩ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি ভীমসেন মণ্ডল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে সরাসরি বেআইনি বালির কারবার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। দলের কেউ যুক্ত থাকলেও তাঁকে রেয়াত করা হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। তাই বিরোধীরা কী বলছেন তাতে কিছু যায় আসে না। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।”
সেচ দফতরের দামোদর হেড ওয়ার্কস ডিভিশনের এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার বলেন, “সেচখাল থেকে বালি তোলা কখনও বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি নজরে এসেছে। পুলিশকে জানানো হবে।” পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy