মানকরের আনন্দময়ী কালী। নিজস্ব চিত্র
কালীপুজোর ঐতিহ্যের দিক থেকে পিছিয়ে নেই বুদবুদ, কাঁকসা এলাকা। বহু গ্রামে প্রাচীন কালীপুজো হয়। সে সব পুজো শুরুর পিছনে রয়েছে নানা কাহিনীও। জাঁকজমক কমলেও, পুজোর উদ্যোগে ভাটা পড়েনি আজও।
বুদবুদের মানকর গ্রামের কবিরাজ বাড়ির কালীপুজো প্রায় তিনশো বছরের পুরনো। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কালী ‘আনন্দময়ী’ কালী হিসাবেই পরিচিত। বর্ধমানের রাজা উদয়চাঁদের কবিরাজ ছিলেন রাজবল্লভ গুপ্ত। জনশ্রুতি আছে, এক সময় রাজার মেয়ে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলেন রাজবল্লভ। এর পরে, তাঁকে মানকরে বেশকিছু জমি, পুকুর দেওয়া হয়। তাঁকে ‘রাজবৈদ্য’ হিসাবে নিযুক্তও করা হয়। তখন থেকেই রাজবল্লভ মানকরে বসবাস শুরু করেন এবং সেখানেই আনন্দময়ী কালীর পুজো শুরু করেন।
পুজোর দায়িত্বে থাকা গোপাল কবিরাজ জানান, রাজবল্লভ ‘স্বপ্নাদেশ’ পেয়ে কাশী (বর্তমান বারাণসী) থেকে কষ্টি পাথরের কালী মূর্তি নিয়ে এসে পুজো শুরু করেন। সারা বছর পুজো হয় এই মন্দিরে। পাশাপাশি, দুর্গাপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোর নবমীর দিন, মাঘ মাসে রটন্তী পুজোর দিন ও চৈত্র মাসে ফলহারিণী পুজো হয় এখানে। এই পুজোয় ১৮ রকমের মিষ্টি দেওয়া হয়। নুন ছাড়া, তরকারি পুজোর ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়। মন্দিরের পাশে থাকা পুকুরে নিত্য স্নান করানো হয়। এই পুকুরে সাধারণের ব্যবহার নিষিদ্ধ। বুদবুদের কোটা গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের পুজো ৩২০ বছরে পড়ল। এই প্রতিমার উচ্চতা হয় ২২ ফুট। ‘বড় মা’ কালী বলেই পরিচিত এই পুজো। সেবাইত বছর বিরাশির নির্মলেন্দু ভট্টাচার্যের দাবি, তিনি নিজের হাতেই মাঁচা বেঁধে এই প্রতিমা নির্মাণ করেন। এই পুজো শুরু করেছিলেন মনোহর ভট্টাচার্য। কথিত আছে, তিনি এক বার কাটোয়ার গঙ্গায় স্নান করতে যান। গৌরাঙ্গ ঘাটের কাছে কালীমন্দিরের পাশে এক ধর্মশালায় বিশ্রাম নেওয়ার সময় তিনি কালীর স্বপ্নাদেশ পান। কালী তাঁকে স্বপ্নে পুজো করার কথা বলেছিলেন। এর পরে, কাটোয়া থেকে হেঁটে কোটা গ্রামে এসে পুজো শুরু করেন। পুজোর পরের দিন অন্ন ভোগ বিতরণ করা হয়।
কাঁকসার পানাগড় গ্রামের শ্মশানকালী পুজো প্রায় ৩৭ বছরের পুরনো। শুধু পানাগড় গ্রামই নয়। আশপাশের অন্য গ্রাম থেকেও বহু মানুষ এই পুজোয় যোগ দেন। গ্রামের বাসিন্দারাই একটি কমিটি গঠন করে সারা বছর এই মন্দিরের দেখভাল করেন। গ্রামবাসী বিশ্বজিৎ রায় জানান, ওই শ্মশান চত্বরটি এক সময় জঙ্গলে ঘেরা ছিল। সেখানে ‘সাধু মা’ নামে এক মহিলা বসবাস করতেন। ওই মহিলা মারা যাওয়ার পরেই বাসিন্দাদের তরফে এই পুজো শুরু করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy