Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Laxmi Puja

তিলের নাড়ু উধাও, দর বেড়েছে কদমার

গতবারের তুলনায় এ বার আসানসোলের বাজারে প্রতিমার দর অন্তত ২০-৩০ টাকা বেশি বলে জানান ক্রেতারা।

আসানসোল বাজারে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

আসানসোল বাজারে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০০:০৮
Share: Save:

লক্ষ্মী প্রতিমা থেকে চাঁদমালা, তিলের নাড়ু থেকে কদমা— বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুজোর আগে এ সবের চড়া বাজারদরের ফলে পকেটে টান পড়েছে আসানসোলের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের। দরবৃদ্ধির কারণে বিরক্ত এ সবের প্রস্তুতকারক থেকে খুচরো বিক্রেতারাও।

লক্ষ্মীপুজোয় বাড়িতে ছাঁচের প্রতিমা, সরা রেখে পুজো হয় সাধারণত। গতবারের তুলনায় এ বার আসানসোলের বাজারে প্রতিমার দর অন্তত ২০-৩০ টাকা বেশি বলে জানান ক্রেতারা। দু’শো থেকে চারশো টাকার মতো দর ছিল গতবার। মহিশীলার ছাঁচের প্রতিমা বিক্রেতা অজিত রুদ্রপাল বলেন, ‘‘গঙ্গামাটি ছাড়া, ছাঁচের প্রতিমা ভাল হয় না। এই মাটি এ বার ট্রাক পিছু গত বারের তুলনায় প্রায় দশ হাজার টাকা বেশি দরে কিনেছি। তা-ও সময় মতো মিলছে না। করোনা-পরিস্থিতিতে পরিবহণও স্বাভাবিক হয়নি। ফলে, রং-সহ অন্য উপকরণের দর বেড়েছে। এ বার ছ’মাস রোজগার ছিল না। তাই প্রতিমার দর এটুকু বাড়াতেই হত।’’

প্রতিমার জন্য চাঁদমালা কেনার চল রয়েছে নানা বাড়িতে। কিন্তু আসানসোল, বার্নপুর, বরাকর-সহ বিভিন্ন বাজারে গতবার এক-একটি চাঁদমালা ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বার দাম দশ-পনেরো টাকা বেশি। এই পরিস্থিতিতে চাঁদমালার পাইকারি বিক্রেতা অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দাম বেড়েছে। ফলে, ক্রেতারা কিনছেন কম। আমাদেরও বিক্রি কম হচ্ছে।’’ কিন্তু দর বেড়েছে কেন? পাইকারি বিক্রেতারা জানান, পূর্ব বর্ধমানের বনকাপাশি থেকে চাঁদমালা আসে পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন বাজারে। এ বার সেখান থেকেই চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জিনিস পাওয়া যায়নি।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরে পুজোর উপাচারেও দরবৃদ্ধির ছেঁকা গৃহস্থের হাতে। কার্যত, গোটা শিল্পাঞ্চলে তিলের নাড়ুর জোগান নেই। বেশ কয়েকটি দশকর্মার দোকানের মালিক জানান, এই নাড়ু সাধারণত জেলায় আসে বিহারের গয়া থেকে। তা ছাড়া, প্রতিবারই দুর্গাপুজোর আগে গয়ার কারিগরেরা আসানসোলের বিভিন্ন এলাকায় এসে অস্থায়ী শিবির বানিয়ে এই নাড়ু তৈরি করেন। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় তাঁরাও আসতে না পারায় এই উপকরণটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বিকল্প হিসেবে অরুন্ধতী তরফদারদের মতো অনেকেই বাজার থেকে কাঁচা তিল কিনে আখের গুড়ের পাক দিয়ে নাড়ু বানিয়ে নিয়েছেন বলে জানান। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নাগালের মধ্যেই থাকা নারকেল নাড়ু কিনছেন অনেকেই, জানান বার্নপুর বাজারের দশকর্মা বিক্রেতা গণেশ দত্ত।

এ বার আকাশ-ছোঁয়া কদমার দর। এর নেপথ্যে বেশ কয়েকটি কারণ জানান বারাবনির দোমহানির কদমা প্রস্তুতকারক মনোজ দে। তিনি জানান, জোগান কম থাকায় চিনির দাম অনেকটাই বেশি। ফলে, কদমার দরও বেড়েছে। তা ছাড়া, করোনা-পরিস্থিতির মধ্যে দুর্গাপুজোয় এ বার কদমার চাহিদা একেবারেই ছিল না। ফলে, সেই সময়ে কদমা বানাননি বেশির ভাগ কারিগর। মনোজবাবু বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোর সময়েই লক্ষ্মীপুজোর কদমা বানিয়ে রাখা হয়। এ বার খুব সামান্যই বানিয়েছি। গতবার বড় কদমার দর ছিল ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কিলো। এ বার কেজি প্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে।’’ এই অবস্থার প্রভাব দেখা গিয়েছে খোলা বাজারেও। আসানসোল বাজারের কদমা বিক্রেতা প্রান্তিক রাহা জানান, বড় কদমাগুলি দোমহানি থেকে বরাত দিয়ে আনাতে হয়। এ বার কার্যত তা পাওয়া যায়নি। যা পাওয়া যাচ্ছে, তা কেজি প্রতি ৩২০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট কদমা নানা এলাকায় বানিয়ে বিক্রি হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Laxmi Puja Materials
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy